শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১০

Nobider Jiboni (5)

হযরত মুহাম্মদ (সঃ)
মানবতার বন্ধু সবêশেষ নবী হযরত মুহা্‌ম্মদ (সাঃ) আরবের মক্কা নগরীতে মাতা আমিনার কোলে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে জম্ম গ্রহন করে। জম্মে আগেই পিতা আব্দুল্লাহ মৃতুø বরন করেন। ৫ বছর বয়স পযêন্ত দুধ মা হালিমার কাছে থাকেন। অতঃপর পিতৃব্য আবু তালিবের তত্ত্বাবধানে বেড়ে ওঠেন। মক্কায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ১৭ বছর বয়সে হিলফুর ফুজুল নামক শান্তি সংঘ গঠন করেন।কাফিরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নবুয়াতের ৫ম বষেê প্রথম পবেê ১৬ জন আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। দ্বিতীয় দফায় আরো হিজরত করেন ৮৩ জন মুসলমান । এ সময় ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা কুরাইশ নেতা হযরত উমর (রাঃ) ইসলাম কবুল করেন । প্রথম বারের মত মুসলমানরা কাবা প্রাঙ্গনে প্রকাশ্যে সালাত আদায় করেন । ৪৭ বছর বয়সে শিয়াবে আবু তালিবে অবরোধ জীবন শুরূু হয় এবং ৪৯ বছর বয়সে শেষ হয় । তিনি নবুয়াতের ১০ম বষেê ইসলাম প্রচারের জন্য তায়েফে গমন করেন । তায়েফবাসী অস্বীকৃতি জানায় এবং নিযাêতন চালায়। ৫১বছর বয়সে নবুয়াতের ১২বষেê আকাবা নামক স্থানে ১২জন মদীনাবাসী বাইয়াত গ্রহন করেন। তিনি ৫২ বছর বয়সে আয়েশা (রাঃ) এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। অতঃপর সবোêত্তম আদêশ মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কায় কাফেরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আল্লাহর হুকুমে ৬২২ খৃঃ আবু বকর (রঃ)কে সাথে নিয়ে মদিনায় হিজরত করেন। তিনি বিশিষ্ট সাহাবী আবু আইয়ূব আনসারীর বাড়ি উঠেন। বানুনায় উপতক্যায় বনী পল্লীতে ১০০জন সাহাবী নিয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করেন।৬২৩ খৃঃ কাফেরদের সাথে ১৭ই রমজান বদরের যুদ্ধ হয়। ৩১৩ জন সাহাবী নিয়ে কাফিরদের মোকাবেলায় রাসূল(সাঃ) বিজয় লাভ করেন । ৩য় হিজরী ১১ শাওয়াল বিখ্যাত ওহূদ যুদ্ধ হয়। এতে চাচা হামযা সহ ১৭জন শাহাদাত বরন করেন। ৪থê হিজরীতে সফর মাসে বীরে মাউনা নামক স্থানে ৬৮ জন ইসলাম-প্রচারক সাহাবীকে কাফিররা নিমêমভাবে হত্যাকরা হয় ।মহানবীকে হত্যা প্রচেষ্টা অপরাধে রবিউল আওয়াল মাসে বনু নাযিল গোত্রকে মদীনা প্রজাতন্ত্র থেকে বহিষ্ড়্গার করা হয়। ৬ষ্ঠ হিজরীতে তিনি হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে ১৫০০ জন সাহাবী নিয়ে মক্কার দিকে যাত্রা শুরু করেন । হুদাইবিয়া নামক স্থানে কাফিররা বাধা প্রধান করে। সেখানে ঐতিহাসিক হুদায়বিয়া সন্ধি সাক্ষরিত হয়। ৮ম হিজরিতে যায়িদ ইবনে হারিসর নেতৃত্বে সিরিয়ায় একদল সৈন্য প্রেরিত হয়। জমাদিউল আওয়াল মাসে সিরিয়ার খৃষ্টান নেতা শোরাহবীলের বাহিনীর সাথে মুতা নামক স্থানে এক রত্ত্নক্ষয়ী যুদ্ধ হয় । এই যুদ্ধে মুসলিম সেনাপতি যায়িদ ইবনে হারিসা, জাফর ইবনে আবু তালিব ও আব্দুল্লাহ ইবনে রাওহা শাহাদাত বরন করেন ।৮ম হিজরী (২০ রমজান) ৬২ বছর বয়সে ১০ হাজার মুসলিম সৈন্য নিয়ে মহানবী (সাঃ) বিনা রত্ত্নপাতে মক্কা বিজয় করেন। ৬৩২খৃষ্টাব্দে ১২ রবিউল আওয়াল সোমবার ৬৩ বছর বরসে মহানবী (সাঃ) ইন্তেকাল করেন। ১৪ রবিউল আওয়াল রাসূল (সাঃ) এর দাফন সম্পূনê হয়।

হযরত দাউদ (আঃ)
দাউদ (আঃ) ফিলিস্থিানে জম্মগ্রহন করেন। তিনি ইয়াকুব (আঃ) এর ১২ পুত্রের মধ্যে ইয়াহুদার বংশধর ছিলেন। তিনি ছিলেন সুবত্ত্না ও সুমধুর কন্ঠের অধিকারী। ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুয়াত প্রাপ্ত হন। যখন তিনি যাবুর কিতাব পাঠ করেতেন তখন আকাবা উপসাগরের মাছ, আকাশের পাখি, বনের পশু এক হয়ে আল্লাহর কিতাব শুনতো। আকাবা উপসাগরের তীরে বসে তিনি প্রতি শনিবার যাবুর কিতাব তিলাওয়াত করতেন। দাউদ (আঃ) ঐ এলাকার মানুষকে শনিবার মাছ ধরতে নিষেধ করেন। কিন্তু তারা শনিবার বাধ দিয়ে অন্য দিন মাছ ধরতো। ফলে আল্লাহর গজবে তারা বানরে পরিনত হয।পবিত্র রমজান মাসের ১২ তারিখ তার উপর যাবুর কিতাব অবতীনê হয়। তিনি পশু পাখির ভাষা বুঝতেন। হযরত দাউদ (আঃ) ই প্রথম, যিনি একাধারে রাসুল এবং সুদক্ষ রাষ্ট্র নায়ক ছিলেন। তার সম্পকেê আল্লাহ বলেন “ হে দাউদ ভূ-পৃষ্ঠে আমি তোমাকে আমার খলিফা নিযুত্ত্ন করেছি। অতপর তুমি লোকদের মধ্যে সুবিচার কর এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না।” (সূরা ছোয়াদ ২৬) তিনি মুসা (আঃ) এর শরিয়ত পুনঃজীবিত করেন। পাশ্চাত্যের পন্ডিদদের কাছে তিনি শরহম উবারক নামে পরিচিত। তার সময়ে “উঊগঙএজঅচঐজ" শাস্ত্রের আবিêভাব ঘটে। তিনিই প্রথম পৃথিবীতে মানুষ গণনা বা আদমশুমারি শুরূ করেন। তার তত্ত্বাবধানে যুদ্ধাস্ত্র তৈরীর প্রচলন শুরূ হয়। জেরুজালেমে একটি উচু টাওয়ার নিমêান করেন যেখানে উঠলে মরুসাগর ও জদাêন নদী দেখা যেত।

হযরত সুলায়মান (আঃ)
হযরত সুলাইমান হযরত দাউদের পুত্র ছিলেন। তিনি খৃঃ পূবê ১০৩৫ অব্দে জেরূজালেমে জম্ম গ্রহন করেন। তিনি ছিলেন দাউদ আঃ এর সুযোগ্য পুত্র। বায়তুল মাকদাসের দৈঘê ৬০ হাত এবং প্রস্থ ২০ হাত, উচ্চতা ৩০ হাত ছিল। সুলায়মান( আঃ) কে আরে্‌লাহ তায়ালা জ্বীনকে বশীভুত করার ক্ষমতা দান করেছিলেন । এ সম্পকেê আল্লাহ বলে্‌ন“ আর বশীভূত করে দেয়া হয়েছে অবাধ্য জ্বীনকে যে সবê প্রকার কমê সমাধানকারী, ইমারত নিমাêনকারী এবং সমুদ্রে ডুবুরী রূপ”(সূরা ছোয়াদ ৩৭) মাসজিদুল আকসা পুনঃনিমাêনে ৩০,০০০ শ্রমিক ৭ বছর যাবৎ পরিশ্রম করেন। তার শাসনকালে বিদ্যাসূচনা। তিনি একাধারে সম্রাট ও নবী ছিলন। তিনি পশু-পাখির ভাষা বুঝতেন। বাতাস ও জ্বীন জাতি তার অনুগত ছিল। তার রাজত্বকাল ছিল ৯৬৫-৯২৬ খৃষ্টপূবêাব্দ। একবার দুই মহিলার বাচ্চা নিয়ে দ্বন্দ্ব বাধে। একজনের বাচ্চা নেকড়ে বাঘে নিয়ে যায়। ধুতê মহিলা অন্যের বাচ্চা বলে দাবী করে। বিষয়টি বাদানুবাদের একপযêায়ে হযরত সুলাইমানের দরবারে হাজির হয়। ধুতê মহিলা জোর গলায় কসমের কারনে সুলাইমান তাকে বাচ্চাটি দিয়ে দেন। অপর মহিলাটি সুলাইমানের নিকট গেলেন এবং বিষয়টি খুলে বললেন। সুলাইমান সব শুনে বাচ্চাটিকে দ টুকরো করে দু জনকে দিয়ে দেয়ার নিদেêশ দিলেন। এ কথা শুনে শিশুটির প্রকৃত মা বললেন, না হুজুর এমনটি করবেন না। আমি আমার বাচ্চার দাবী ছেড়ে দিচ্ছি। এ কথা শুনে সুলাইমান (আঃ) সঠিক তথ্য উদঘাটন করতে সক্ষম হন এবং বাচ্চাটিকে তার আসল মায়ের নিকট ফিরিয়ে দেন। হ

ইউনুস (আঃ)
ইউনুস আঃ ইরানের নিনেয়া শহরে যার বতêমান নাম মসুল বাগদাদ থেকে ৩৯৬কিঃমিঃ উত্তরে ফোরাত নদীর তীরে খৃ পূবê ৩৭২ সালে জম্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম আসতাহ। তিনি ২৮ বছব বয়সে নবুয়াত প্রাপ্ত হন। নিনেয়াবাসী যখন ইউনুস আঃ এর কথা অমান্য করে আল্লাহর নাফরমানিতেন লিপ্ত ছিল এবং পয়গায়ম্বরের কথায় ঠাট্রা বিদ্রোপ করছিল তখন তিনি বদদোয়া করে অন্যত্র চলে যাচ্ছিলেন যাবার কালে ফোরাত নদীর তীরে নৌকায় উঠার পর প্রচন্ড ঝড়তুফান শুরু হলো। তখন যাত্রীরা লটারীর সাহায্যে ইউনুস আঃ কে দায়ী করে নদীতে নিক্ষেপ করলে আর্‌লাহর হুকুমে নদীর মাছ তাকে গিলে ফেলেছিল। যখন তিনি বুঝতে পারলেন যে মাছের পেটে জীবিত আছেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে এস্তেগফার ও তাসবিহ পাঠ শুরু করলেন। আর আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করলেন। পরে মাছ তাঁকে উগলিয়ে নদীর তীরে ফেলে দিল। তিনি সেখানে একখানা কুটির নিমêান করে কিছু দিন বসবাস করলেন। এবং আল্লাহর নিদেêশে পুনরায় মসুলে ফিরে গেলেন। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরয়ানে আল্লাহ বলেন “আর ইউনুস “আঃ”অবশ্যই প্রেরিত পুরুষদের অন্যতম।” (সুরা আস সাফফাত-১৩৯) হযরত যাকারিয়া(আঃ)
যাকারিয়া (আঃ) প্রায় ২১০০বছর পূবেê ফিলিস্তনে বনি ইসরাঈল গোত্রে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি সুলাইমান ইবনে দাউদ (আঃ) এর বংশধর ছিলেন।তার স্ত্রী ইশা বা ইয়শ হারূন আঃ এর বংশধর। ইয়াহিয় (আঃ) এর পিতা এবং নবী ঈশা( আঃ) এর খালু যাকারিয়া (আঃ) বায়তুল মাকদাসের রক্ষনাবেক্ষনকারী এবং ঈশা (আঃ) এর মাতা সারইয়ামের লালন পালন করতেন। আল্লাহর অনুগ্রহে ১০০ বছর বয়সে এক কন্যা সন্তান লাভ করেন। যার নাম মরিয়ম। যাকারিয়ার স্ত্রী ও মরিয়মের মা ছিলেন সহোদর বোন। যাকারিয়ার বাধêক্যের চরম পযêায়ে তার দোয়ার বরকতে হযরত ইয়াইয়া জন্ম গ্রহণ করেন। (আল ইমরান-৩০,৩৭, মরিয়ম-২৬, আম্বিায়া-৮৯) তার সময় ইহুদীরা প্রকাশ্যে যিনা ব্যাভিচার করত। যাকারিয়া (আঃ) সম্পকেê পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন - “আরো দান করেছি যাকারিয়া, ঈশা, ইয়াহিয়া ও ইলিয়াসকে। তারা সবাই পুন্যবানদের অন্তêভুত্ত্ন ছিল” সূরা (আনয়াম ৮৫) হযরত ইয়াহইয়া (আঃ)পবিত্র করআনে আল্লাহ পাক বলেন “হে যাকারিয়া আমি নিঃসন্দেহে তোমাকে সুসংবাদ প্রদান করছি একপুত্রের নাম হবে ইয়াহইয়া । হযরত ইয়হইয়া (আঃ) পূবেê আর কারো জন্যে এ নাম নিধাêরিত করিনি।”(সূরা মারিয়াম-৭)যাকারিয়া (আঃ) এর দোয়ার বরকতে বন্ধা মাতার গভেê খৃঃ পূবê ১ সালে জম্ম গ্রহন করেন ইয়াহইয়া (আঃ । তিনি ঈশা (আঃ) এর খালাত ভাই ছিলেন । তিনি বেশির ভাগ সময়ে নিজêনে খোদার প্রেমে কান্নাকাটি করে কাটাতেন । তিনি ইয়ারদান নদীর তীরে আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত দিতেন । ইয়াহইয়া (আঃ) মানুষ কে ৫ টি বিষয়ে দাওয়াত দিতেন । ১· আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করা২· সালাত আদায় করা৩· রোজা পালন করা৪· অধিক পরিমানে আল্লাহর যিকির করা৫· দান সাদকা করা ।তার সময়ের শাসক ছিল হিরোদ এন্টিপাস। এন্টিপাস তার এক নতêকীর আবদারে হযরত ইয়হইয়া (আঃ) কে হত্যা করেন এবং তার মস্তক দ্বীখন্ডিত করে নতêকীকে উপহার দেন।

হযরত ঈসা (আঃ)
হযরত ঈসা (আঃ)বায়তুল লাহাম যেখানে আজ থেকে প্রায় দুই হাজার বছর পূবেê ঈসা (আঃ) জম্ম গ্রহন করেন। ঈসা আরবী শব্দ। হিব্রূ ভাষা এর অথê হলো ত্রানকতাê। গ্রীক ভাষায় বলা হয় মাসীই তার উপাধি । এর অথê হল স্পশê করা। কারন ঈসা (আঃ) রূগ্ন ব্যত্ত্নিকে স্পশê করা মাত্রই সুস্থ হয়ে যেত । ঈসা (আঃ) মারইয়ামের গভেê আল্লাহর কুদরতে পিতা ছাড়াই জম্ম গ্রহন করেন। ঈসা (আঃ) এর ৫ টি মুজিজা ছিল। ১· তিনি আল্লাহর হুকুমে মৃতকে জীবিত করতে পারতেন ২· মাটির তৈরী পাখিকে ফু দিলে উড়ে যেত ৩· অন্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে ফু দিলে ভাল হয়ে যেত৪· মানুষ ঘরে যে খাবার খেত তিনি তা বলতে পারতেন ৫· ঈসা(আঃ) এর সঙ্গীদের অনুরোধে আল্লাহর কুদরতে আকাশ থেকে খাদ্য ভরা পাত্র নাযিল হতো ।ঈসা (আঃ) এর মাতা মরিয়ম একদা বায়তুল মাকদাসের পূবêপাশের একটি কক্ষে ইফতাররত। হঠাৎ তার কক্ষে অপরুপ সুপুরুষের উদয় হল। তিনি বললেন আমি তোমার প্রভূর দূত। তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন এই সংবাদ নিয়ে যে , তিনি তোমাকে একজন পবিত্র পুত্র সন্তান দান করবেন। (মরিয়ম ১৬-২০) মরিয়ম বিস্মিত হয়ে বললেন, আমাকে তো কোন পুরুষ স্পশê করেনি। আমি তো ব্যাভিচারী নই। কি করে আমার পুত্র সন্তান হবে। ফিরিশতা বললেন, আল্লাহ যা চান তাই হয়। পুত্র সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার পুবেê তিনি বেথেলহাম চলে যান। আল্লাহর নিদেêশে হযরত ঈসা (আঃ) জন্ম গ্রহন করলেন। জন্মের পর মরিয়ম ছেলেকে কোলে নিয়ে ফিরে এলে লোকেরা তাকে অপবাদ দিতে লাগল। আল্লাহর ইচ্ছায় শিশু ঈসা কথা বলে উঠলেন- “আমি আল্লাহর দাস। তিনি আমাকে কিতাব দান করেছেন এবং কিতাব দান করেছেন। তিনি ৩০ বছর বয়সে নবুয়াত প্রাপ্ত হন । তার উপর ইঞ্জিল কিতাব অবতীনê হয়। বনি ইসরাঈলগন তাকে শুলে চড়িয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল। আল্লাহ তাদের চত্র্নান্ত নস্যাৎ করে দিয়ে মাত্র ৩২ বছর বয়সে তাকে উধ্বê জগতে নিয়ে যান।

Nobider Jiboni (4)

হযরত শুয়াইব (আঃ)
কোরআন মাজিদে শুয়াইব (আঃ) কে মাদইয়ান ও আইকা বাসীদের নবী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মাদাইনবাসীদের বসবাস ছিল উত্তর হিজাজ থেকে ফিলিস্তিনের দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে এবং সেখান থেকে সিনাই উপত্যকার শেষ প্রান্ত পযêন্ত আকাবা উপসাগর এবং লোহিত সাগরের তীর পযêন্ত। মাদইয়ান ছিল তাদের প্রধান শহর। তিনি মূসা (আঃ) এর পূবেêর নবী ছিলেন। শুয়াইব (আঃ) খৃঃ পূবê ৫০০-৬০০ সালের মধ্যে মাদায়েনে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ইব্রাহিম (আঃ) এর ছেলে মাদায়েনের বংশধর। রাসূল (সঃ) তাঁকে ‘খতিবুল আম্বিয়া’ বা নবীদের মাঝে ‘শ্রেষ্ঠ বত্ত্না’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মাদায়েনের জনগণের সুবিধার জন্য তিনি একটি কূপ খনন করেন। এই কূপের পানি থেকে জনগন উপকৃত হত। তিনি মাদায়েন ও আইকা সম্প্রদায়ের নবী হিসেবে প্রেরিত হন। মূসা (আঃ) এর শ্বশুর ছিলেন শুয়াইব (আঃ)। মাদায়েনবাসী সম্পকেê আল্লাহ বলেন- “আমি মাদায়েনবাসীদের প্রতি তাদের ভ্রাতা শুয়াইব (আঃ) কে পাঠিয়েছিলাম। সে বলেছিল, হে আমার সম্প্রদায় তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর,···।” (আনকাবুত-৩৬)মাদইয়ান ও আকাইবাসীদের দুরাচারঃ১· তারা আল্লাহর দ্বীনকে বিকৃত করেছিল।২· আল্লাহর সাথে শিরক করত এবং মুতিê পূজা করত। ৩· তারা জীবন যাপনের সঠিক পথ থেকে দূরে সরে পড়েছিল।৪· তারা মাপে কম দিত, ঠকাতো এবং প্রতারণা করত।৫· ডাকাতি এবং হাইজাক ছিল তাদের নিত্যদিনের কাজ।হযরত শুয়াইব (আঃ) অনেক চেষ্টা করেও এই দুটি জাতিকে যখন আল্লাহর পথে আসল না এবং নবী ও তার সাথীদের উৎখাত করার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিল আল্লাহ তখন উভয় জাতিকে প্রচন্ড বজ্রধ্বনি দিয়ে ধ্বংশ করে দিলেন।

হযরত মূসা (আঃ)ঃ
মূসা (আঃ) ৩২০০ বছর পূবেê মিশরের সিনাই উপত্যকায় জন্মগ্রহন করেন। মূসা শব্দের অথê মূশা যার অথê নাজাত দানকারী। তিনি বনী ইসরাঈলকে ৪০০ বছরের গোলামী থেকে নাজাত দান করেছিলেন। জন্মের পর তিনি আল্লাহর কুদরতে ফেরাউন দ্বিতীয় রামিসাসের ঘরে লালিত-পালিত হন। তিনি নবুয়্যত লাভের পর আল্লাহর নিদেêশে ফেরাউন এর নিকট আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে যান। তিনি হযরত ইব্রাহীমের নাতী ইয়াকুবের বংশধর। যারা বনী ইসরাঈল নামে পরিচিত ছিল। তৎকালে মিশরে ফারাওরা রাজত্ব করত। মুসার জন্মের সময় যে ফেরাউন রাজা ছিল তার নাম ছিল দ্বিতীয় রামিসাস। জন্মের পর রাজার ভয়ে তার মাতা তাকে সিন্দুকে ভরে নদীতে ভাসিয়ে দিলেন। রাজপ্রাসাদ নদীর তীরবতêী হওয়ায় সিন্দুকটি রাজপ্রাসাদের ঘাটে গিয়ে ভিড়ল। ফেরাউন সিন্দুকের শিশুটিকে দেখে বনী ইসরাঈলের সন্তান ভেবে মেরে ফেলার নিদেêশ দিলেন। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় ফেরাউনের স্ত্রী আছিয়া তাকে মৃতুøর হাত থেকে রক্ষা করলেন। এভাবে ফেরাউনের ঘরেই তিনি লালিত পালিত হতে থাকেন। বড় হয়ে তিনি পিতা-মাতার কাছ থেকে জানতে পারলেন যে, তিনি ইব্রাহিম ও ইয়াকুবের বংশধর। ফলে তিনিও মানসিকভাবে সত্যানুসন্ধানী হয়ে ওঠেন। ফেরাউন দাওয়াত গ্রহনে অস্বীকৃতি জানায় এবং মু’জিযা দাবী করলে তিনি তাঁর হাতের লাঠিখানা মাঠিতে নিক্ষেপ করেন এবং সাথে সাথে তা বিশাল অজগরে পরিণত হয়। মু’জিযা প্রত্যক্ষ করা সত্বেও দাওয়াত গ্রহনে অস্বীকৃতি জানিয়ে মুসা এবং তার অনুসারীদের উপর জুলুম নিযêাতন করে। খৃঃপূবê ১২৩৫ সালে মূসা (আঃ) তাঁর সঙ্গী সাথীদেরকে নিয়ে ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ফেরাউন তার সৈন্য সামন্ত নিয়ে মূসা (আঃ) এর পশ্চাদ্ধাবন করে লোহিত সাগরের দিকে রওনা হন। মূসা (আঃ) তাঁর হাতের লাঠি সাগরে নিক্ষেপ করলে বারোটি রাস্তা তৈরি করা হয়। মূসা (আঃ) তার সাথীদের নিয়ে সাগর অতিত্র্নম করেন। কিন্তু ফেরাউন সাগরের মাঝামাঝি আসা মাত্র সঙ্গী সাথীদের সলীল সমাধী ঘটে। মিশরের যাদুঘরে ফেরাউেনের লাশ আজও রক্ষিত আছে। মূসা (আঃ) তুর পাহাড়ে আল্লাহ তায়ালার সাথে কথা বলেন এবং নবুয়্যত প্রাপ্ত হন। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন- “তাকে আমি আহ্বান করেছিলাম তুর পাহাড়ের দক্ষিণ দিক থেকে এবং আমি অন্তরঙ্গ আলাপে তাকে নিকটবতêী করেছিলাম। আমি নিজ অনুগ্রহে তাকে দিলাম তার ভ্রাতা হারুনকে নবী রুপে। (মরিয়ম-৫২-৫৩)। সমুদ্র সমতল থেকে তুর পাহাড়ের উচ্চতা ৮২৬ মিটার। তুর পাহড়ে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তাওরাত নামক আসমানী কিতাব প্রাপ্ত হন। সমুদ্র অতিত্র্নম করে মূসা (আঃ) বনী ইসরাঈলদের নিয়ে বায়তুল মাকদাস রওয়ানা হন। মরুভুমিতে পানির অভাব হলে হাতের লাঠি দিয়ে পাথরে আঘাত করলে আল্লাহর নিদেêশে পানির ১২ টি ঝণêা প্রবাহিত মকরে শুরু করে, যা আজও প্রবহমান। হযরত হারুন (আঃ) ছিলেন মূসা (আঃ) এর ভাই। তিনি ছিলেন ইব্রাহিম (আঃ) এর সপ্তম অধঃস্তন পুরুষ। তিনি মূসা (আঃ) এর সাহায্যকারী ও প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন- “আমি তো মূসা (আঃ) কে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তার ভাই হারুনকে তার সাহায্যকারী করেছিলাম এবং বলেছিলাম তোমরা সেই সম্প্রদায়ের নিকট যাও , যারা আমার নিদশêনাবলীকে অস্বীকার করেছে। অতঃপর আমি তাদেরকে সম্পূণêরূপে বিধ্বস্ত করেছিলাম”। (আল ফুরকান-৩৫-৩৬) মূসা (আঃ) যখন চল্লিশ দিন এতেকাফের জন্য গমন করেন তখন হারুন (আঃ) কে তার স্থলাভিষিত্ত্ন করে যান। সিনাই উপত্যকায় থেকে তিনি বনী ইসরাঈলীদের রাফিদিনে পৌছান। এ জায়গা থেকে হারুন (আঃ) আল-মারখাওয়াতে যান যেখানে মান্নাহ ও সালওয়া নাযিল হয়েছিল। হারুন (আঃ) মূসা (আঃ) এর ৩ বছর পূবেê জন্ম গ্রহন করেন। হযরত মূসা (আঃ) এর বংশ পরিচয়ঃ হযরত মূসা (আঃ) এর বংশধারা কয়েক পুরুষের মাধ্যমে হযরত ইয়াকুব (আঃ) পযêন্ত পৌছে। তাঁর পিতার নাম ইমরান এবং মাতার নাম ইউকাবাদ। হযরত হারুন (আঃ) তাঁর সহোদর ও জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ছিলেন। ইমরান এর গৃহে হযরত মূসা (আঃ) এর জন্ম হয়েছিল এমন সময়ে যখন ফেরাউন বনী ইসরাইল বংশের সদ্যোজাত বালকদিগকে হত্যা করা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। হযরত মূসা (আঃ) এর মু’জিযাসমুহঃ১· লাঠি২· শুভ্রোজ্জল হাত ৩· দুভিêক্ষ৪· শস্যহানি ৫· ঝড়-তুফান ৬· পঙ্গপাল৭· উকুন ৮· ব্যাঙ৯· রত্ত্ন ১০· লোহিত সাগর খন্ডিত হয়ে শুষ্ড়্গ রাস্তা বাহির হওয়া১১· মান্না ও সালওয়া (হালুয়া এবং বটের পাখীর ভাজা মাংস ১২· গামাস(মেঘের ছায়া) ১৩· পাথর হইতে লাঠির আঘাতে পানির ঝণêা প্রবাহিত হওয়া১৪· তূর পাহাড় সমূলে উৎপাটিত হয়ে মাথার উপরে আসা ১৫· তাওরাত নাযিল হওয়া কয়েকটি বিষয়ঃ১· মানুষ যদি কোন বিপদ ও পরীক্ষার সম্মুখীন হয়, তবে তাহার অবশ্য কতêব্য হয় ধৈযê্য ও সন্তুষ্টির সাথে উহার মোকাবিলা করা। এরূপ করলে নিঃসন্দেহে সে মহা মঙ্গল লাভ করবে এবং নিশ্চিত সে সফলকাম হবে। ২· যদি আল্লাহ পাকের কোন বান্দা সত্যের সাহায্যাথেê জীবন হাতে লয়ে দাঁড়িয়ে যায়, তবে আল্লাহ তায়ালা বাতিলের পূজারীদেরই মধ্য হতে তার সাহায্যকারী পয়দা করে দেন। ৩· যার ব্যাপার আল্ল্লাহ পাকের সাথে ইশক (প্রেম) পযêন্ত পৌঁছে যায়, তার জন্য বাতিলের বড় শত্ত্নিও তুচ্ছ এবং অস্তিত্বশূণ্য হয়ে পড়ে।৪· একবারও যদি কেহ ঈমানের সুস্বাদু উপভোগ করে লয় এবং সত্য মনেও খাঁটিঅন্তরে উহাকে কবুল করে লয় তবে এই মোহ তাকে এতই মত্ত করে ফেলে যে তার প্রত্যেক টি ধমনী হতে শুধু সেই সত্যের ধ্বনিই উত্থিত হতে থাকে। ৫· সবরের ফল সবêদা মিষ্ট হয়ে থাকে সেইফল লাভ করতে যত দুঃখ কষ্ট করতে হোক না কেন তবু সেই ফল মিষ্টই লাগবে। জমীনের কিংবা রাজ্যের উত্তরাধিকারীত্ব সেই কাওমেরই প্রাপ্য যারা নিঃস্বতা ও নিঃসম্বলতা হতে নিভêীক হয়ে এবং দৃঢ় সংকল্প ও সাহসের পরিচয় দিয়ে সবêপ্রকার বাধা বিপত্তির মোকাবেলা করে এবং ধৈযেêর সাথে আল্লাহ পাকের সাহায্য ভরসা করে চেষ্টা ও পরিশ্রম ময়দানে দৃঢ়পদ থাকে। ৬· বাতিলের শত্ত্নি যতই যবর দস্তি হোক এবং যতই প্রতাপ ও পরাত্র্নমশালী হোক না কেন পরিশেষে তাকে বিফলতার মুখ দেখতেই হবে এবং পরিনামে সাফল্যের মুকুট তারই জন্য সুনিশ্চিত যে নেককার এবং সাহসী। ৭· আল্লাহর চিরন্তন নীতি উৎপীড়ক ও অত্যাচারী কাওম গুলি যে সমস্ত কাওমকে হীন ও নীচ মনে করে এমন একদিন আসে যে সেই দুবêল ও উৎপীড়িত কাওমগুলো আল্লাহ পাকের যমীনের উত্তরাধিকারী হয় এবং শাসন ও ক্ষমতার অধিকারী হয়ে যায়। ৮· শত্ত্নি ও শাসন ক্ষমতা এবং ধন সম্পদের মদে মত্ত কাওমগুলিই সবêদা সত্যের দাওয়াতের বিরোধীতা করেছে। ৯· ইহা অত্যন্ত বড় গুমরাহীযে যখন সত্যের বদৌলতে মানুষ সফলতা ও কৃতকাযêতা লাভ করে, তখন আল্লাহর শোকর গুজারী দাসত্ব ও মিনতির পরিবতেê সত্যের বিরোধীদের ন্যায় অমনোযোগীতা ও অবাধ্যাচরনে লিপ্ত হয়ে পড়ে। ১০· ধমêীয় ব্যাপারে একটি অতি বড় গুমরাহী হল মানুষের সততা ও সত্য নিষ্ঠার সাথে ধমêীয় বিধানের উপর আমল না করা এবং নিজের কু-প্রবৃত্তির অনুসরণ করে আল্লাহ পাকের বিধানসমূহে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী টালবাহানা করা এবং আত্নপ্রতারণায় লিপ্ত হয়ে এরূপ মনে করে বসা যে মনোবাঞ্জা ও পূরণ হয়ে গেল এবং ধমêীয় বিধান পালন ও হয়ে গেল। মন্দকে মন্দ মনে করা উহাতে লিপ্ত হওয়া ততটুকু মন্দ নয়-যতটুকু মন্দ ও নিন্দনীয় হচ্ছে মন্দকে ভালরূপ দান করা এবং নিষিদ্ধ কাযêাবলীতে টালবাহানা করে উহাকে জায়েজ বানানো । অধিকাংশ কওমের উপর আল্ল্লাহতাআলার আযাব এই ঘৃণ্য কাজের দরুনই হয়েছে। ১১· সত্যকে কেউ কবুল করুক বা না করুক, সত্যের প্রতি আহবানকারীর কতêব্য সত্য উপদেশ প্রদানে বিরত না থাকা।১২· কোন কওমের উপর অত্যাচারী ও জালিম শাসক ক্ষমতাসীন হয়ে গেলে এতে প্রমাণিত হয় না যে, সেই অত্যাচারী শাসক আল্ল্লাহর নিকট প্রিয় ও সম্মানিত; বরং অত্যাচারী শাসক আল্লাহর আযাব বিশেষ, শাসিত কওমের মন্দ কাযêসমূহের কমêফলরূপে প্রকাশ পেয়ে থাকে; কিন্তু শাসিত কওমের মস্তিষ্ড়্গকে অত্যাচারী শত্ত্নির প্রভাব এমনভাবে আচ্ছন্ন করে যে, তারা অত্যাচারী শাসকের প্রতাপ ও প্রতিপত্তিকে তার উপর আল্ল্লাহর রহমত এবং তার কাযêাবলীর পুরস্ড়্গার বলে মনে করে।১৩· কোন মানুষের পক্ষেই সে নবীই হোক কিংবা রাসূল হোক, এ দাবী সঙ্গত নয় যে , জগতে তার ন্যায় বড় জ্ঞানী বা আলেম আর কেউ নেই। এরূপ দাবী করা বরং তার পক্ষে আল্ল্লাহর জ্ঞানের উপর ন্যস্ত করে দেওয়া উত্তম।১৪· ইসলাম ধমেêর অনুসারীদের জন্য দাসত্ব গুরুতর লানত বা অভিশাপ, আল্ল্লাহর অতিবড় গযব। আর সেই দাসত্বে তৃপ্ত হয়ে যাওয়া আল্ল্লাহর আযাব ও গযবের উপর সন্তুষ্ট ও তৃপ্ত হওয়ার শামিল।

হযরত যুলকিফ্‌ল (আঃ)ঃ
কুরআন মাজিদে যুলকিফ্‌ল নামটি দুবার উল্লেখ করা হয়েছে। দু‘বারই অন্যান্য নবীদের সাথে তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। একবার সূরা ছোয়াদে এভাবেঃ “ইসমাঈল, আল ইয়াসা আর যুলকিফ্‌ল এর কথা স্মরণ কর। এরা সবাই ছিল উত্তম মানুষ। (সুরা সোয়াদ- ৪৮)। যুলকিফ্‌ল ছিল বনী ইসরাঈলের একজন নবী। কেউ কেউ বলেছেন তিনি ছিলেন আইয়ুব (আঃ) এর পুত্র। যুলকিফ্‌ল শব্দের অথê ভাগ্যবান। এটি ছিল তাঁর উপাধি। তাঁর মূল নাম ছিল বিশর। তিনি ২২ বছর যাবৎ বনী ইসরাঈলীদের মাঝে নবুয়্যতের দায়িত্ব পালন করেন। সুরা আম্বিয়া ৮৫-৮৬, যুলকিফল (আঃ) বনী ইসরাঈলের নবী ছিলেন। কেউ কেউ বলেন তিনি আইয়ুব (আঃ) এর পুত্র ছিলেন। তার মূল নাম ছিল বিশর আর যুলকিফল ছিল তার উপাধী। অনেকে মনে করেন যুলকিফল আসলে বাইবেলে উল্লেখিত যিহিস্ড়্গেল নবী। মুসলমানদের নিকট তিনি হীজকিল নামে পরিচিত।

হযরত ইলিয়াস (আঃ)ঃ
ইলিয়াস (আঃ) জডêানের জিলিয়াদ নামক ন্থানে জন্মগ্রহন করেন। তিনি হারুন (আঃ) এর বংশধর ছিলেন। তার সম্মন্ধে কোরআনে বণêনা করা হয়েছে- “নিঃসন্দেহে ইলিয়াস রাসুলগনের অন্তভêুত্ত্ন। যখন তিনি নিজ সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা কি সাবধান হবে না? তোমরা বায়ালকে ডাকছো অথচ সবেêাত্তম শ্রষ্ঠাকে পরিহার করছ ? সেই আল্লাহকে যিনি তোমাদের এবং পূবêপুরুষদেরও প্রভূ”। (আস সাফ্‌ফাত-১২৩-১২৬) পবিত্র কোরআনে তার নাম তিন বার এসেছ। ঐতিহাসিক এবং তাফসিরকারকদের মতে, ৪ জন নবী এখনও জীবিত আছেন যারা হলেন ইদ্রিস (আঃ), খিজির (আঃ), ইলিয়াস (আঃ) এবং ঈসা (আঃ)। ইলিয়াস (আঃ) সেমেটিক জাতিকে হেদায়েত করার জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন। তাঁর জাতি ইলিয়াস (আঃ) এর দাওয়াতকে অগ্রাহ্য করে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তাঁর সম্প্রদায়ের উপর দুভিêক্ষ নেমে আসে এতে রাজা ক্ষিপ্ত হয়ে ইলিয়াস (আঃ) কে হত্যার পরিকল্পনা শুরু করে ফলে আল্লাহ তাকে আসমানে উঠিয়ে নিয়ে যান বলে কোন কোন বণêনায় জানা যায়।

হযরত আল ইয়াসা (আঃ)ঃ
আল ইয়াসা হলেন আল ইসবাত ইবনে আদি ইবনে সাওতালম ইবনে আফ্রাছিম ইবনে ইউসুফ ইবনে ইয়াকুব ইবনে ইসহাক ইবনে ইব্রাহিম খলীল (আঃ)। বলা হয় আল ইয়াসা (আঃ) ছিলেন ইলিয়াস (আঃ) এর চাচাতো ভাই (ইবনে কাছির)। তার পিতার নাম ছিল সাফাত। কথিত আছে ইলিয়াস (আঃ) যখন কাসিউন পাহাড়ে সংগোপনে অবস্থান করছিলেন তখন আল ইয়াসা (আঃ) তাঁর সহযাত্রী ছিলেন। তাঁর জীবনের আরো উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলোঃ আরীয়ার পানি ছিল ব্যাবহারের অনুপোযোগী। আল ইয়াসা (আঃ) সেই পানিতে লবন নিক্ষেপ করলে পানি নিমêল ও সুপেয় হয়ে গিয়েছিল।

হযরত মুহাম্মদ (সঃ)
মানবতার বন্ধু সবêশেষ নবী হযরত মুহা্‌ম্মদ (সাঃ) আরবের মক্কা নগরীতে মাতা আমিনার কোলে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে জম্ম গ্রহন করে। জম্মে আগেই পিতা আব্দুল্লাহ মৃতুø বরন করেন। ৫ বছর বয়স পযêন্ত দুধ মা হালিমার কাছে থাকেন। অতঃপর পিতৃব্য আবু তালিবের তত্ত্বাবধানে বেড়ে ওঠেন। মক্কায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ১৭ বছর বয়সে হিলফুর ফুজুল নামক শান্তি সংঘ গঠন করেন।কাফিরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নবুয়াতের ৫ম বষেê প্রথম পবেê ১৬ জন আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। দ্বিতীয় দফায় আরো হিজরত করেন ৮৩ জন মুসলমান । এ সময় ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা কুরাইশ নেতা হযরত উমর (রাঃ) ইসলাম কবুল করেন । প্রথম বারের মত মুসলমানরা কাবা প্রাঙ্গনে প্রকাশ্যে সালাত আদায় করেন । ৪৭ বছর বয়সে শিয়াবে আবু তালিবে অবরোধ জীবন শুরূু হয় এবং ৪৯ বছর বয়সে শেষ হয় । তিনি নবুয়াতের ১০ম বষেê ইসলাম প্রচারের জন্য তায়েফে গমন করেন । তায়েফবাসী অস্বীকৃতি জানায় এবং নিযাêতন চালায়। ৫১বছর বয়সে নবুয়াতের ১২বষেê আকাবা নামক স্থানে ১২জন মদীনাবাসী বাইয়াত গ্রহন করেন। তিনি ৫২ বছর বয়সে আয়েশা (রাঃ) এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। অতঃপর সবোêত্তম আদêশ মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কায় কাফেরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আল্লাহর হুকুমে ৬২২ খৃঃ আবু বকর (রঃ)কে সাথে নিয়ে মদিনায় হিজরত করেন। তিনি বিশিষ্ট সাহাবী আবু আইয়ূব আনসারীর বাড়ি উঠেন। বানুনায় উপতক্যায় বনী পল্লীতে ১০০জন সাহাবী নিয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করেন।৬২৩ খৃঃ কাফেরদের সাথে ১৭ই রমজান বদরের যুদ্ধ হয়। ৩১৩ জন সাহাবী নিয়ে কাফিরদের মোকাবেলায় রাসূল(সাঃ) বিজয় লাভ করেন । ৩য় হিজরী ১১ শাওয়াল বিখ্যাত ওহূদ যুদ্ধ হয়। এতে চাচা হামযা সহ ১৭জন শাহাদাত বরন করেন। ৪থê হিজরীতে সফর মাসে বীরে মাউনা নামক স্থানে ৬৮ জন ইসলাম-প্রচারক সাহাবীকে কাফিররা নিমêমভাবে হত্যাকরা হয় ।মহানবীকে হত্যা প্রচেষ্টা অপরাধে রবিউল আওয়াল মাসে বনু নাযিল গোত্রকে মদীনা প্রজাতন্ত্র থেকে বহিষ্ড়্গার করা হয়। ৬ষ্ঠ হিজরীতে তিনি হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে ১৫০০ জন সাহাবী নিয়ে মক্কার দিকে যাত্রা শুরু করেন । হুদাইবিয়া নামক স্থানে কাফিররা বাধা প্রধান করে। সেখানে ঐতিহাসিক হুদায়বিয়া সন্ধি সাক্ষরিত হয়। ৮ম হিজরিতে যায়িদ ইবনে হারিসর নেতৃত্বে সিরিয়ায় একদল সৈন্য প্রেরিত হয়। জমাদিউল আওয়াল মাসে সিরিয়ার খৃষ্টান নেতা শোরাহবীলের বাহিনীর সাথে মুতা নামক স্থানে এক রত্ত্নক্ষয়ী যুদ্ধ হয় । এই যুদ্ধে মুসলিম সেনাপতি যায়িদ ইবনে হারিসা, জাফর ইবনে আবু তালিব ও আব্দুল্লাহ ইবনে রাওহা শাহাদাত বরন করেন ।৮ম হিজরী (২০ রমজান) ৬২ বছর বয়সে ১০ হাজার মুসলিম সৈন্য নিয়ে মহানবী (সাঃ) বিনা রত্ত্নপাতে মক্কা বিজয় করেন। ৬৩২খৃষ্টাব্দে ১২ রবিউল আওয়াল সোমবার ৬৩ বছর বরসে মহানবী (সাঃ) ইন্তেকাল করেন। ১৪ রবিউল আওয়াল রাসূল (সাঃ) এর দাফন সম্পূনê হয়।

হযরত দাউদ (আঃ)
দাউদ (আঃ) ফিলিস্থিানে জম্মগ্রহন করেন। তিনি ইয়াকুব (আঃ) এর ১২ পুত্রের মধ্যে ইয়াহুদার বংশধর ছিলেন। তিনি ছিলেন সুবত্ত্না ও সুমধুর কন্ঠের অধিকারী। ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুয়াত প্রাপ্ত হন। যখন তিনি যাবুর কিতাব পাঠ করেতেন তখন আকাবা উপসাগরের মাছ, আকাশের পাখি, বনের পশু এক হয়ে আল্লাহর কিতাব শুনতো। আকাবা উপসাগরের তীরে বসে তিনি প্রতি শনিবার যাবুর কিতাব তিলাওয়াত করতেন। দাউদ (আঃ) ঐ এলাকার মানুষকে শনিবার মাছ ধরতে নিষেধ করেন। কিন্তু তারা শনিবার বাধ দিয়ে অন্য দিন মাছ ধরতো। ফলে আল্লাহর গজবে তারা বানরে পরিনত হয।পবিত্র রমজান মাসের ১২ তারিখ তার উপর যাবুর কিতাব অবতীনê হয়। তিনি পশু পাখির ভাষা বুঝতেন। হযরত দাউদ (আঃ) ই প্রথম, যিনি একাধারে রাসুল এবং সুদক্ষ রাষ্ট্র নায়ক ছিলেন। তার সম্পকেê আল্লাহ বলেন “ হে দাউদ ভূ-পৃষ্ঠে আমি তোমাকে আমার খলিফা নিযুত্ত্ন করেছি। অতপর তুমি লোকদের মধ্যে সুবিচার কর এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না।” (সূরা ছোয়াদ ২৬) তিনি মুসা (আঃ) এর শরিয়ত পুনঃজীবিত করেন। পাশ্চাত্যের পন্ডিদদের কাছে তিনি শরহম উবারক নামে পরিচিত। তার সময়ে “উঊগঙএজঅচঐজ" শাস্ত্রের আবিêভাব ঘটে। তিনিই প্রথম পৃথিবীতে মানুষ গণনা বা আদমশুমারি শুরূ করেন। তার তত্ত্বাবধানে যুদ্ধাস্ত্র তৈরীর প্রচলন শুরূ হয়। জেরুজালেমে একটি উচু টাওয়ার নিমêান করেন যেখানে উঠলে মরুসাগর ও জদাêন নদী দেখা যেত।

হযরত সুলায়মান (আঃ)
হযরত সুলাইমান হযরত দাউদের পুত্র ছিলেন। তিনি খৃঃ পূবê ১০৩৫ অব্দে জেরূজালেমে জম্ম গ্রহন করেন। তিনি ছিলেন দাউদ আঃ এর সুযোগ্য পুত্র। বায়তুল মাকদাসের দৈঘê ৬০ হাত এবং প্রস্থ ২০ হাত, উচ্চতা ৩০ হাত ছিল। সুলায়মান( আঃ) কে আরে্‌লাহ তায়ালা জ্বীনকে বশীভুত করার ক্ষমতা দান করেছিলেন । এ সম্পকেê আল্লাহ বলে্‌ন“ আর বশীভূত করে দেয়া হয়েছে অবাধ্য জ্বীনকে যে সবê প্রকার কমê সমাধানকারী, ইমারত নিমাêনকারী এবং সমুদ্রে ডুবুরী রূপ”(সূরা ছোয়াদ ৩৭) মাসজিদুল আকসা পুনঃনিমাêনে ৩০,০০০ শ্রমিক ৭ বছর যাবৎ পরিশ্রম করেন। তার শাসনকালে বিদ্যাসূচনা। তিনি একাধারে সম্রাট ও নবী ছিলন। তিনি পশু-পাখির ভাষা বুঝতেন। বাতাস ও জ্বীন জাতি তার অনুগত ছিল। তার রাজত্বকাল ছিল ৯৬৫-৯২৬ খৃষ্টপূবêাব্দ। একবার দুই মহিলার বাচ্চা নিয়ে দ্বন্দ্ব বাধে। একজনের বাচ্চা নেকড়ে বাঘে নিয়ে যায়। ধুতê মহিলা অন্যের বাচ্চা বলে দাবী করে। বিষয়টি বাদানুবাদের একপযêায়ে হযরত সুলাইমানের দরবারে হাজির হয়। ধুতê মহিলা জোর গলায় কসমের কারনে সুলাইমান তাকে বাচ্চাটি দিয়ে দেন। অপর মহিলাটি সুলাইমানের নিকট গেলেন এবং বিষয়টি খুলে বললেন। সুলাইমান সব শুনে বাচ্চাটিকে দ টুকরো করে দু জনকে দিয়ে দেয়ার নিদেêশ দিলেন। এ কথা শুনে শিশুটির প্রকৃত মা বললেন, না হুজুর এমনটি করবেন না। আমি আমার বাচ্চার দাবী ছেড়ে দিচ্ছি। এ কথা শুনে সুলাইমান (আঃ) সঠিক তথ্য উদঘাটন করতে সক্ষম হন এবং বাচ্চাটিকে তার আসল মায়ের নিকট ফিরিয়ে দেন। হ

যরত ইউনুস (আঃ)
ইউনুস আঃ ইরানের নিনেয়া শহরে যার বতêমান নাম মসুল বাগদাদ থেকে ৩৯৬কিঃমিঃ উত্তরে ফোরাত নদীর তীরে খৃ পূবê ৩৭২ সালে জম্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম আসতাহ। তিনি ২৮ বছব বয়সে নবুয়াত প্রাপ্ত হন। নিনেয়াবাসী যখন ইউনুস আঃ এর কথা অমান্য করে আল্লাহর নাফরমানিতেন লিপ্ত ছিল এবং পয়গায়ম্বরের কথায় ঠাট্রা বিদ্রোপ করছিল তখন তিনি বদদোয়া করে অন্যত্র চলে যাচ্ছিলেন যাবার কালে ফোরাত নদীর তীরে নৌকায় উঠার পর প্রচন্ড ঝড়তুফান শুরু হলো। তখন যাত্রীরা লটারীর সাহায্যে ইউনুস আঃ কে দায়ী করে নদীতে নিক্ষেপ করলে আর্‌লাহর হুকুমে নদীর মাছ তাকে গিলে ফেলেছিল। যখন তিনি বুঝতে পারলেন যে মাছের পেটে জীবিত আছেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে এস্তেগফার ও তাসবিহ পাঠ শুরু করলেন। আর আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করলেন। পরে মাছ তাঁকে উগলিয়ে নদীর তীরে ফেলে দিল। তিনি সেখানে একখানা কুটির নিমêান করে কিছু দিন বসবাস করলেন। এবং আল্লাহর নিদেêশে পুনরায় মসুলে ফিরে গেলেন। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরয়ানে আল্লাহ বলেন “আর ইউনুস “আঃ”অবশ্যই প্রেরিত পুরুষদের অন্যতম।” (সুরা আস সাফফাত-১৩৯)

হযরত যাকারিয়া(আঃ)
যাকারিয়া (আঃ) প্রায় ২১০০বছর পূবেê ফিলিস্তনে বনি ইসরাঈল গোত্রে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি সুলাইমান ইবনে দাউদ (আঃ) এর বংশধর ছিলেন।তার স্ত্রী ইশা বা ইয়শ হারূন আঃ এর বংশধর। ইয়াহিয় (আঃ) এর পিতা এবং নবী ঈশা( আঃ) এর খালু যাকারিয়া (আঃ) বায়তুল মাকদাসের রক্ষনাবেক্ষনকারী এবং ঈশা (আঃ) এর মাতা সারইয়ামের লালন পালন করতেন। আল্লাহর অনুগ্রহে ১০০ বছর বয়সে এক কন্যা সন্তান লাভ করেন। যার নাম মরিয়ম। যাকারিয়ার স্ত্রী ও মরিয়মের মা ছিলেন সহোদর বোন। যাকারিয়ার বাধêক্যের চরম পযêায়ে তার দোয়ার বরকতে হযরত ইয়াইয়া জন্ম গ্রহণ করেন। (আল ইমরান-৩০,৩৭, মরিয়ম-২৬, আম্বিায়া-৮৯) তার সময় ইহুদীরা প্রকাশ্যে যিনা ব্যাভিচার করত। যাকারিয়া (আঃ) সম্পকেê পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন - “আরো দান করেছি যাকারিয়া, ঈশা, ইয়াহিয়া ও ইলিয়াসকে। তারা সবাই পুন্যবানদের অন্তêভুত্ত্ন ছিল” সূরা (আনয়াম ৮৫) হযরত ইয়াহইয়া (আঃ)পবিত্র করআনে আল্লাহ পাক বলেন “হে যাকারিয়া আমি নিঃসন্দেহে তোমাকে সুসংবাদ প্রদান করছি একপুত্রের নাম হবে ইয়াহইয়া ।

হযরত ইয়হইয়া (আঃ)
পূবেê আর কারো জন্যে এ নাম নিধাêরিত করিনি।”(সূরা মারিয়াম-৭)যাকারিয়া (আঃ) এর দোয়ার বরকতে বন্ধা মাতার গভেê খৃঃ পূবê ১ সালে জম্ম গ্রহন করেন ইয়াহইয়া (আঃ । তিনি ঈশা (আঃ) এর খালাত ভাই ছিলেন । তিনি বেশির ভাগ সময়ে নিজêনে খোদার প্রেমে কান্নাকাটি করে কাটাতেন । তিনি ইয়ারদান নদীর তীরে আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত দিতেন । ইয়াহইয়া (আঃ) মানুষ কে ৫ টি বিষয়ে দাওয়াত দিতেন । ১· আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করা২· সালাত আদায় করা৩· রোজা পালন করা৪· অধিক পরিমানে আল্লাহর যিকির করা৫· দান সাদকা করা ।তার সময়ের শাসক ছিল হিরোদ এন্টিপাস। এন্টিপাস তার এক নতêকীর আবদারে হযরত ইয়হইয়া (আঃ) কে হত্যা করেন এবং তার মস্তক দ্বীখন্ডিত করে নতêকীকে উপহার দেন।

হযরত ঈসা (আঃ)
হযরত ঈসা (আঃ)বায়তুল লাহাম যেখানে আজ থেকে প্রায় দুই হাজার বছর পূবেê ঈসা (আঃ) জম্ম গ্রহন করেন। ঈসা আরবী শব্দ। হিব্রূ ভাষা এর অথê হলো ত্রানকতাê। গ্রীক ভাষায় বলা হয় মাসীই তার উপাধি । এর অথê হল স্পশê করা। কারন ঈসা (আঃ) রূগ্ন ব্যত্ত্নিকে স্পশê করা মাত্রই সুস্থ হয়ে যেত । ঈসা (আঃ) মারইয়ামের গভেê আল্লাহর কুদরতে পিতা ছাড়াই জম্ম গ্রহন করেন। ঈসা (আঃ) এর ৫ টি মুজিজা ছিল। ১· তিনি আল্লাহর হুকুমে মৃতকে জীবিত করতে পারতেন ২· মাটির তৈরী পাখিকে ফু দিলে উড়ে যেত ৩· অন্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে ফু দিলে ভাল হয়ে যেত৪· মানুষ ঘরে যে খাবার খেত তিনি তা বলতে পারতেন ৫· ঈসা(আঃ) এর সঙ্গীদের অনুরোধে আল্লাহর কুদরতে আকাশ থেকে খাদ্য ভরা পাত্র নাযিল হতো ।ঈসা (আঃ) এর মাতা মরিয়ম একদা বায়তুল মাকদাসের পূবêপাশের একটি কক্ষে ইফতাররত। হঠাৎ তার কক্ষে অপরুপ সুপুরুষের উদয় হল। তিনি বললেন আমি তোমার প্রভূর দূত। তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন এই সংবাদ নিয়ে যে , তিনি তোমাকে একজন পবিত্র পুত্র সন্তান দান করবেন। (মরিয়ম ১৬-২০) মরিয়ম বিস্মিত হয়ে বললেন, আমাকে তো কোন পুরুষ স্পশê করেনি। আমি তো ব্যাভিচারী নই। কি করে আমার পুত্র সন্তান হবে। ফিরিশতা বললেন, আল্লাহ যা চান তাই হয়। পুত্র সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার পুবেê তিনি বেথেলহাম চলে যান। আল্লাহর নিদেêশে হযরত ঈসা (আঃ) জন্ম গ্রহন করলেন। জন্মের পর মরিয়ম ছেলেকে কোলে নিয়ে ফিরে এলে লোকেরা তাকে অপবাদ দিতে লাগল। আল্লাহর ইচ্ছায় শিশু ঈসা কথা বলে উঠলেন- “আমি আল্লাহর দাস। তিনি আমাকে কিতাব দান করেছেন এবং কিতাব দান করেছেন। তিনি ৩০ বছর বয়সে নবুয়াত প্রাপ্ত হন । তার উপর ইঞ্জিল কিতাব অবতীনê হয়। বনি ইসরাঈলগন তাকে শুলে চড়িয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল। আল্লাহ তাদের চত্র্নান্ত নস্যাৎ করে দিয়ে মাত্র ৩২ বছর বয়সে তাকে উধ্বê জগতে নিয়ে যান।

Nobider Jiboni (3)

হযরত লূত (আঃ)ঃ
লূত শব্দের অথê জড়িয়ে যাওয়া, এঁকে যাওয়া। লুত (আঃ) ইব্রাহীম (আঃ) এর একান্ত প্রিয়ভাজন ও অন্তরঙ্গ ছিলেন বলেই তাঁর নাম লূত হয়। প্রায় চার হাজার বছর পূবেê লুত (আঃ) বাবেল শহরে জন্ম গ্রহন করেন। তিনি ইব্রাহীম (আঃ) এর ভাতিজা ছিলেন। তিনি সামূদ গোত্রের নিকট প্রেরিত হন। তাঁর গোত্রের লোকেরা সমকামিতা , বনিকদের সম্পদ লুন্ঠনসহ যাবতীয় অপকমেê লিপ্ত থাকত । কুরআনে তাদের সম্পকেê বলা হয়েছে “তোমরা কি ঐ সমস্ত লোক নও যে তোমরা পুরুষদের সাথে অপকমê করছ, ডাকাতি করছ, নিজেদের মজলিশ সমূহে এবং পরিবার পরিজনের সম্নূখে অশ্লীল কাজ করছ”।(সূরা আনকাবূত-২৯) এই সমকামিতার অপরাধে এবং ফিরিশতাদের সাথে খারাপ আচরনের জন্য আল্লাহ সামূদ জাতির বস্তিসহ গোটা জমিনকে উল্টিয়ে দেন। জমিন উল্টানোর ফলে নিচের পানি উপরে এসে সাগর সৃষ্টি হয়েছে। এই সাগর ৮২ কিলোমিটার লম্বা ,১৮ কিলোমিটার প্রস্থ এবং ১০০০ফুট গভীর । অতিরিত্ত্ন লবনের কারনে পানির ঘনত্ব অত্যাধিক বেশি যার ফলে কোন মানুষ পানিতে ডোবেনা।

হযরত ইসমাঈল (আঃ)ঃ
ইব্রাহীম (আঃ) ্‌এর দ্বিতীয় স্ত্রী হাজেরার গভেê ইসমাঈল (আঃ) আজ থেকে প্রায় তিন হাজার নয়শত দশ বছর আগে আজকের ফিলিস্তিনের হেবরুনে জন্ম গ্রহন করেন। ইব্রাহীম (আঃ)আল্লাহর নিদেêশে শিশু পুত্রসহ বিবি হাজেরকে মক্কা উপতাক্যয় নিবêাসন দান করেন । ইসমাঈল (আঃ) সম্পকেê আল্লাহ বলেন “আর ইসমাঈল, ইয়াসা, ইউনুস,ও লুত-প্রত্যেককেই আমি সারা বিশ্বের উপর গৌরবান্বিত করেছি”। (সূরা আনআম -৮৬)নিবêাসনে মশকের সঞ্চিত পানি শেষ হওয়ার পর হযরত হাজেরা ছাপাও মারওয়া পাহাড়ের মধ্যে পানির সন্ধানে সাতবার সায়ী করেন যা বতêমানে হজ্বের একটি গুরুত্বপূনê অংশ। হঠাৎ হাজেরা (আঃ) দেখলেন জিব্রাইল (আঃ) মাটিতে আঘাত করছেন। অতঃপর পানি বের হওয়া শুরু হলো। হাজেরা (আঃ) পানি সংগ্রহ করে পাথর দিয়ে বাঁধ দিলেন । যা জম জম কূপ কূপ হিসেবে পরিচিত। জমজম শব্দের অথê শত্ত্ন করে বাঁধ দেয়া। ইসমাঈল (আঃ) ১৩৭ বছর জীবিত ছিলেন।

হযরত ইসহাক (আঃ)ঃ
ইব্রাহিম (আঃ)এর বয়স যখন একশো বছর এবং বিবি সারাহ এর বয়স ৯০ বছর তখন আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে একজন সন্তানের শুভ সংবাদ দেন । সে সন্তানের নামই ইসহাক (আঃ)। ইসহাক (আঃ) এর দুছেলে তারা হলেন ইয়াকুব এবং ইশু । তিনি ১৮০ বছর জীবিত ছিলেন এবং কেনানে মৃত্যুবরণ করেন।

হযরত ইয়াকুব (আঃ)
হযরত ইয়াকুব (আঃ) কেনান অথêাৎ আজকের ফিলিস্তিনের জেরুজালেমে জন্মগ্রহন করেন । ইয়াকুব (আঃ) এর উপাধি হলো ঈসরাইল। ইব্রানী ভাষায় ইসরা অথê গোলাম এবং ‘আইল’ অথê আল্লাহ । অথêাৎ ঈসরাইল অথê ‘আল্লাহর বান্দা’ । তাঁর পিতা হযরত ইসহাক (আঃ) এবং মাতা রহীল বিনতে লাবান । ইয়াকুব (আঃ) ১২ সন্তানের জনক ছিলেন । রাতবীন, শামাউন, লাওয়া, ইয়াহুদ দাইসাফার, যালুবন,ইউসুফ, বেনইয়ামীন, দান,নাফতালা ,যাদ, ও আষার । বেনইয়ামীন ব্যতীত তার সকল সন্তান ফাদ্দাম আরামে জন্মগ্রহন করেন । বেনইয়ামীনকে ইহুদী নাসারা বেন্‌জামিন এবং ইঊসুফ (আঃ) কে জোসেফ বিকৃত নামে ডাকে । আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাঁর সম্বন্ধে বলেন, “···এবং আমি ইব্রাহিমকে দান করেছিলাম ইসহাক এবং পৌত্ররুপে ইয়াকুব ,আর প্রত্যেককেই করেছিলাম সৎ কমêপরায়ণ।” (আম্বিয়া-৭২) ইয়াকুব (আঃ) ১৪৭ বৎসর বয়সে ইন্তেকাল করেন এবং ফিলিস্তিনের হেবরুনে তাঁকে দাফন করা হয় ।

হযরত ইউসুফ (আঃ)
ইউসুফ (আঃ) ছিলেন ইয়াকুব (আঃ) এর ১১তম সন্তান । একদা তিনি স্বপ্নে দেখেন ১১টি গ্রহ তাকে সিজদা করছে উত্ত্ন ঘটনা ইয়াকুব (আঃ) কে বলেন। ঘটনাত্র্নমে তার ভাইয়েরা ঘটনাটি জেনে গেলেন । তাঁর ভাইয়েরা তাঁকে এক অন্ধকার কূপে নিক্ষেপ করেছিল। মিশরগামী বানিজ্য কাফেলা কূপের ভিতর বালতি নিক্ষেপ করলেই ইউসুফ (আঃ) সেটা ধরে ফেলেন এবং বালতিসহ তিনি উপরে উঠে আসেন। তৎক্ষনাৎ তারা এ ফুটপুটে কিশোরকে মিশরের বাজারে নিয়ে গেলে মিশরের বাদশা আজিজ তাকে দাসরূপে ত্র্নয় করে নেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন “একটি যাত্রীদল এলো , তারা তাদের পানি সংগ্রাহককে পানি সংগ্রহের জন্য পাঠালো। সে তাঁর ডোর নামিয়ে দিল। সে বলে উঠলো কি সুখবর! এ যে এক কিশোর অতঃপর তারা তাকে পণ্যরূপে লুকিয়ে রাখলো। তারা যা করতে ছিল আল্লাহ সেসব বিষয়ে অবহিত ছিলেন। (সূরা ইউসুফ-আয়াত ১৯) এ সময় তার বয়স ছিল ১৩ বছর। আজিজের গৃহে তিনি ৬ বছর অবস্থান করার পর তার স্ত্রী জুলেখা কতৃক অপবাদ রটনার পেক্ষিতে তিনি কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন। ইউসুফ আঃ আকষণêীয় সৌন্দêযের অধিকরী ছিলেন। যার প্রমান পাওয়া পবিত্র কোরআনে- “আর ( যখন সেই ব্যাপারের চচêা খুব প্রসারিত হইয়া পড়ল) শহরের কতিপয় স্ত্রীলোক বলিতে লাগিল , দেখ , আযীযের বিবি নিজের গোলামকে প্রেমের ফাঁদে ফেলিতেছে যেন তাহাকে আকৃষ্ট করিয়া লইতে পারে । সে গোলামের প্রেমে আত্মহারা হইয়া পড়িয়াছে। আমাদের ধারনায় সে তো প্রকাশ্যে মন্দ স্বভাবের নিপতিত হইয়াছে। অনন্তর আযীযে মিসরের স্ত্রী যখন তাহাদের ষড়যন্ত্রের কথা শুনিতে পাইল , তখন তাহাদিগকে ডাকাইয়া পাঠাইয়াল এবং তাহাদের জন্য বিস্তৃত আসন সমূহ সজ্জিত করিল এবং প্রত্যেককে একটি করে ছুরি প্রদান করিল। অতঃপর ইউসুফকে বলিল ,ইহাদের সকলের সম্মুখে বাহির হইয়া আস। ইউসুফ আঃ কে যখন সেই মহিলারা দেখিতে পাইল,তখন সকলে তাহার শ্রেষ্ঠত্ব স্বীকার করিল। তাহারা সকলে নিজেতের হাত কাটিয়া ফেলিল । হঠাৎ চীৎকার করিয়া উঠিল , ইনি তো মানুষ নহেন, নিশ্চয়ই কোন বুযূগê ফেরেশতা। (সূরা ইউসুফ) ”পরে বাদশার দেখা সপ্নের ব্যাখ্যা দেওয়ার কারণে তিনি করামুত্ত্ন হয়ে রাজ্যের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত হন। অতঃপর খৃঃ পূবê ১৭০৬ অব্দে পিতা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ রামাসিস নামক স্থানে বসবাস শুরু করেন। হযরত ইউসুফ (আঃ) ১১০ বৎসর বয়সে মিশরে মৃত্যুবরণ করেন।

হযরত আইয়ুব (আঃ)
আল্লাহর প্রিয় নবী হযরত আইয়ুব (আঃ) এর নাম আল কুরআনে চারটি স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে। সুরা আন নিসার ১৬৩, আন আমের ৮৪, আল আম্বিয়ার ৮৩-৮৪, সুরা সোয়াদের ৪১-৪২, নং আয়াতে । ঐতিহাসিক ইবনে ইসহাকের মতে , হযরত ইব্রহিম পুত্র ইসহাক , ইসহাকের পুত্র ঈশু , ঈশুর পুত্র আমূশ , আমুশের পূত্র অইয়ুব। তিনি খৃষ্টপূবê নবম বা দশম শতকের লোক ছিলেন।হযরত আইয়ুব (আঃ) খৃঃ পূবê ১৫০০-১৩০০ সনের মধ্যে দক্ষিণ আরবের আওজ আইল নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। পবিত্র কুরআনে তার নবুয়াত সম্পকেê উল্লেখ আছে- “আর তার আওলাদের মধ্য থেকে দাউদ, সুলাইমান, আইয়ুব, ইউসুফ মূসা এবং হারুন” (আনয়াম-৮৪) আইয়ুব (আঃ) আদওয়ান বংশীয় আরব ছিলেন। তাঁর জামানা ছিল ইয়াকুব এবং মুসা (আঃ) এর মধ্যবতêীকালে। তিনি দীঘê ১৮ বছর অসুস্থ থাকার পর ১৪০ বছর বয়সে রোগ থেকে মুত্ত্নি লাভ করেন। আইয়ুব (আঃ) ২১০ বছর জীবিত ছিলেন।হযরত আইয়ুব ছিলেন বিরাট ধনী ব্যত্ত্নি। তার ধন সম্পদ ছিল অগনিত সীমাহীন। তার ছিল অনেক সন্তান সন্তুাদি। ছিল সুস্বাস্থ্য। এর জন্য তাঁর অহংকার ছিল না। তিনি এগুলোকে আল্লাহর দান অনুগ্রহ মনে করতেন। কঠিন পরীক্ষাঃ হযরত আইয়ুব (আঃ) চারটি বড় বড় পরীক্ষার সম্মূখীন হয়েছিলেনঃ১· তাঁর সমস্ত ধন সম্পদ বিনষ্ট হয়ে যায়।২· তাঁর সমস্ত শরীরে এক কঠিন যন্ত্রনাময় রোগ দেখা যায়।৩· তাঁর স্ত্রী (রহিমা )ছাড়া সকল আপন জন তাকে ছেড়ে চলে যায়।৪· এ অবস্থায় আল্লাহর প্রতি বিমুখ হওয়ার জন্য শয়তান তাকে বারবার প্ররোচনা দিতে থাকে।অতএব পরীক্ষার পড়েও হযরত আইয়ুব (আঃ) সবর অবলম্বন করেন । ধৈযê ধারন করেন । প্রতি মূহুতেê আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি সকল দঃখ কষ্টে জন্য কেবল আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করতেন।

হযরত শুয়াইব (আঃ)
কোরআন মাজিদে শুয়াইব (আঃ) কে মাদইয়ান ও আইকা বাসীদের নবী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মাদাইনবাসীদের বসবাস ছিল উত্তর হিজাজ থেকে ফিলিস্তিনের দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে এবং সেখান থেকে সিনাই উপত্যকার শেষ প্রান্ত পযêন্ত আকাবা উপসাগর এবং লোহিত সাগরের তীর পযêন্ত। মাদইয়ান ছিল তাদের প্রধান শহর। তিনি মূসা (আঃ) এর পূবেêর নবী ছিলেন। শুয়াইব (আঃ) খৃঃ পূবê ৫০০-৬০০ সালের মধ্যে মাদায়েনে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ইব্রাহিম (আঃ) এর ছেলে মাদায়েনের বংশধর। রাসূল (সঃ) তাঁকে ‘খতিবুল আম্বিয়া’ বা নবীদের মাঝে ‘শ্রেষ্ঠ বত্ত্না’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মাদায়েনের জনগণের সুবিধার জন্য তিনি একটি কূপ খনন করেন। এই কূপের পানি থেকে জনগন উপকৃত হত। তিনি মাদায়েন ও আইকা সম্প্রদায়ের নবী হিসেবে প্রেরিত হন। মূসা (আঃ) এর শ্বশুর ছিলেন শুয়াইব (আঃ)। মাদায়েনবাসী সম্পকেê আল্লাহ বলেন- “আমি মাদায়েনবাসীদের প্রতি তাদের ভ্রাতা শুয়াইব (আঃ) কে পাঠিয়েছিলাম। সে বলেছিল, হে আমার সম্প্রদায় তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর,···।” (আনকাবুত-৩৬)মাদইয়ান ও আকাইবাসীদের দুরাচারঃ১· তারা আল্লাহর দ্বীনকে বিকৃত করেছিল।২· আল্লাহর সাথে শিরক করত এবং মুতিê পূজা করত। ৩· তারা জীবন যাপনের সঠিক পথ থেকে দূরে সরে পড়েছিল।৪· তারা মাপে কম দিত, ঠকাতো এবং প্রতারণা করত।৫· ডাকাতি এবং হাইজাক ছিল তাদের নিত্যদিনের কাজ।হযরত শুয়াইব (আঃ) অনেক চেষ্টা করেও এই দুটি জাতিকে যখন আল্লাহর পথে আসল না এবং নবী ও তার সাথীদের উৎখাত করার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিল আল্লাহ তখন উভয় জাতিকে প্রচন্ড বজ্রধ্বনি দিয়ে ধ্বংশ করে দিলেন।

হযরত মূসা (আঃ)ঃ
মূসা (আঃ) ৩২০০ বছর পূবেê মিশরের সিনাই উপত্যকায় জন্মগ্রহন করেন। মূসা শব্দের অথê মূশা যার অথê নাজাত দানকারী। তিনি বনী ইসরাঈলকে ৪০০ বছরের গোলামী থেকে নাজাত দান করেছিলেন। জন্মের পর তিনি আল্লাহর কুদরতে ফেরাউন দ্বিতীয় রামিসাসের ঘরে লালিত-পালিত হন। তিনি নবুয়্যত লাভের পর আল্লাহর নিদেêশে ফেরাউন এর নিকট আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে যান। তিনি হযরত ইব্রাহীমের নাতী ইয়াকুবের বংশধর। যারা বনী ইসরাঈল নামে পরিচিত ছিল। তৎকালে মিশরে ফারাওরা রাজত্ব করত। মুসার জন্মের সময় যে ফেরাউন রাজা ছিল তার নাম ছিল দ্বিতীয় রামিসাস। জন্মের পর রাজার ভয়ে তার মাতা তাকে সিন্দুকে ভরে নদীতে ভাসিয়ে দিলেন। রাজপ্রাসাদ নদীর তীরবতêী হওয়ায় সিন্দুকটি রাজপ্রাসাদের ঘাটে গিয়ে ভিড়ল। ফেরাউন সিন্দুকের শিশুটিকে দেখে বনী ইসরাঈলের সন্তান ভেবে মেরে ফেলার নিদেêশ দিলেন। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় ফেরাউনের স্ত্রী আছিয়া তাকে মৃতুøর হাত থেকে রক্ষা করলেন। এভাবে ফেরাউনের ঘরেই তিনি লালিত পালিত হতে থাকেন। বড় হয়ে তিনি পিতা-মাতার কাছ থেকে জানতে পারলেন যে, তিনি ইব্রাহিম ও ইয়াকুবের বংশধর। ফলে তিনিও মানসিকভাবে সত্যানুসন্ধানী হয়ে ওঠেন। ফেরাউন দাওয়াত গ্রহনে অস্বীকৃতি জানায় এবং মু’জিযা দাবী করলে তিনি তাঁর হাতের লাঠিখানা মাঠিতে নিক্ষেপ করেন এবং সাথে সাথে তা বিশাল অজগরে পরিণত হয়। মু’জিযা প্রত্যক্ষ করা সত্বেও দাওয়াত গ্রহনে অস্বীকৃতি জানিয়ে মুসা এবং তার অনুসারীদের উপর জুলুম নিযêাতন করে। খৃঃপূবê ১২৩৫ সালে মূসা (আঃ) তাঁর সঙ্গী সাথীদেরকে নিয়ে ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ফেরাউন তার সৈন্য সামন্ত নিয়ে মূসা (আঃ) এর পশ্চাদ্ধাবন করে লোহিত সাগরের দিকে রওনা হন। মূসা (আঃ) তাঁর হাতের লাঠি সাগরে নিক্ষেপ করলে বারোটি রাস্তা তৈরি করা হয়। মূসা (আঃ) তার সাথীদের নিয়ে সাগর অতিত্র্নম করেন। কিন্তু ফেরাউন সাগরের মাঝামাঝি আসা মাত্র সঙ্গী সাথীদের সলীল সমাধী ঘটে। মিশরের যাদুঘরে ফেরাউেনের লাশ আজও রক্ষিত আছে। মূসা (আঃ) তুর পাহাড়ে আল্লাহ তায়ালার সাথে কথা বলেন এবং নবুয়্যত প্রাপ্ত হন। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন- “তাকে আমি আহ্বান করেছিলাম তুর পাহাড়ের দক্ষিণ দিক থেকে এবং আমি অন্তরঙ্গ আলাপে তাকে নিকটবতêী করেছিলাম। আমি নিজ অনুগ্রহে তাকে দিলাম তার ভ্রাতা হারুনকে নবী রুপে। (মরিয়ম-৫২-৫৩)। সমুদ্র সমতল থেকে তুর পাহাড়ের উচ্চতা ৮২৬ মিটার। তুর পাহড়ে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তাওরাত নামক আসমানী কিতাব প্রাপ্ত হন। সমুদ্র অতিত্র্নম করে মূসা (আঃ) বনী ইসরাঈলদের নিয়ে বায়তুল মাকদাস রওয়ানা হন। মরুভুমিতে পানির অভাব হলে হাতের লাঠি দিয়ে পাথরে আঘাত করলে আল্লাহর নিদেêশে পানির ১২ টি ঝণêা প্রবাহিত মকরে শুরু করে, যা আজও প্রবহমান।

Nobider Jiboni (2)

হযরত নূহ (আঃ)
হযরত আদম (আঃ) এর পরে হযরত নূহ (আঃ) প্রথম নবী যাঁহাকে প্রথম রাসূল পদ দান করা হইয়াছে। কোরআন মজীদের ৪৩ জায়গায় হযরত নূহ (আঃ) এর নাম রয়েছে। নূহ (আঃ) ফোরাত ও দজলা নদীর মধ্যবতêী চৌদ্দ হাজার বগêকিলোমিটার অঞ্চলের অধিবাসী সুমেরীয় মুতিêপূজকদের মাঝে দ্বীনের দাওয়াত দিতেন। এভাবে হযরত নুহ (আঃ) ৯৫০ বছর দাওয়াতী কাজ করেন কিন্তু মাত্র ৪০ জন লোক ঈমান আনল। সুমেরীয় মুতিêপূজকরা নূহ (আঃ) এর কথায় সাড়া না দিয়ে প্রকাশ্যে খোদাদ্রোহিতায় লিপ্ত হয়।নূহ (আঃ) আল্লাহর নিদেêশে এক লক্ষ চব্বিশ হাজার তত্ত্না দিয়ে বিশাল জাহাজ নিমêান করেন। যার প্রতিটি তত্ত্নায় এক একজন নবীর নাম লেখা ছিল। নূহ (আঃ) এর জাহাজের দৈঘê ছিল ১২০০ হাত, প্রস্থ ৬০০ হাত। যা ছিল ৩ তলা বিশিষ্ট। ৮০ জন ঈমানদার নারি ও পুরুষ এবং প্রতিটি প্রজাতির এক জোড়া করে প্রাণী নিয়ে প্লাবনের পূবেê জাহাজে উঠেছিলেন। খৃষ্টপূবê ৩২৩২ সালে বতêমান ইরাকের উর শহরের গুরপাকনামক স্থানকে কেন্দ্র করে সবê প্রথম প্লাবন শুরু হয় এবং সবকিছু নিচে তলিয়ে যায়। প্রায় ৪০ দিন পযêন্ত বন্যা ছিল। দীঘêদিন পর এই জাহাজ জুদি পাহাড়ে গিয়ে থামে। জুদি পাহাড়, যা নূহ (আঃ) এবং তার সময়কার প্লাবনের সাক্ষী হয়ে দাড়িযে আছে। জুদি পাহাড় আরমেনিয়া আরারাত পবêতশ্রেণীর অন্তভêুত্ত্ন। এটা ৩৮০০ ফুট উচু। জুদি পাহাড় কুদিêস্তান, তুরস্ড়্গ এবং আরমেনিয়া সীমান্তবতêী অঞ্চলে অবস্থিত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন- “হে পৃথিবী তুমি তোমার সব পানি গ্রাস করে নাও এবং হে আকাশ ক্ষান্ত হও। এরপর বন্যা প্রশমিত হল এবং কাযê সমাপ্ত হলো এবং নৌকা জুদি পাহাড়ে গিয়ে গিয়ে থামল এবং বলা হল জালিম সম্প্রদায় দুর হয়ে গেল।” (সূরা হুদ-৪৪) প্লাবনের পর নূহ (আঃ) এর তিন পুত্র জীবিত ছিলেন। পরবতিêতে তাদের বংশধরগনই পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে। হযরত হুদ (আঃ)হুদ (আঃ) আজ থেকে ছয় হাজার বছর পূবেê জন্মগ্রহন করেন। তিনি নুহ (আঃ) এর পুত্র শামের বংশধর বনী আদম গোত্রকে আল্লাহর দ্বীনের দিকে আহ্বান করেন। বতêমান তাঁর জন্ম স্থানের নাম আহকাব বা উকাব নগরী।

হুদ (আঃ)
হুদ (আঃ) এর কবরস্থান হাযরা মাউতের কাসিরে আহমার বা লাল টিলার চুড়ায় অবস্থিত। আদ জাতির রাজধানী ছিল ইয়ামন। বনি আদ গোত্রকে আমালিকা গোত্রও বলা হয়। আল্লাহর নাফরমানির কারনে আদ জাতিকে মাটের সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। পবিত্র কোরআনে এ সম্পকেê বলা হয়েছে- “আর আদ সম্প্রদায়, তাদেরকে ধ্বংস করা হয়েছে এক প্রচন্ড ঝঞ্চা বায়ু দ্বারা, যা তিনি তাদের উপর প্রবাহিত করেছিলেন সপ্তরাত্রি ও অষ্টদিবস বিরামহীনভাবে।” (আর হাক্কা-৬) আদ শব্দের অথê উচ্চ। হুদ (আঃ) এর সময়কালীন স্বৈরাচারী বাদশা শাদ্দাদকে তাঁর দ্বীনের দাওয়াত দিËেয়ছিলেন।

হযরত সালেহ (আঃ)
হযরত সালেহ (আঃ)আজ থেকে পাঁচ হাজার বছর পূবেê ‘হিজর’ নামক স্থানে সালেহ (আঃ) জন্মগ্রহন করেন। হিজাজ ও সিরিয়ার স্থান থেকে কৃষ্ণসাগর পযêন্ত সামুদ জাতির বাসস্থান। তিনি সাম নবীর বংশীয় সামুদ বাদশাহর গোত্র সামুদ জাতির নিকট দ্বীনের দাওয়াত দিতেন। তাঁর বিশ্বাসীর সংখ্যা ছিল চার হাজার। সামুদ শব্দের অথê অল্প পানি। এই জাতি পানি সংকটে জজêরিত ছিল। আল্লাহ সামুদ জাতির পানি পান করার লক্ষ্যে একটি কূপ দান করেছিলেন। সামুদ জাতি সালেহ (আঃ) এর নিকট যখন মুজেজা দাবী করলেন তখন আল্লাহর হুকুমে পাথুরে পাহাড় থেকে একটি উটনি বের হয়ে তৎক্ষনাত প্রসব করতঃ বাচ্চাকে দুধ পান করাতে শুরু করল। এই মুজেজা দেখে কিছু লোক দ্বীন গ্রহন করলো আর কিছু লোক নবীকে যাদুকর বলে আখ্যায়িত করল। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন- “আমাকে কেউ নিষেধ করেনি তবে শুধু এ কারনে পাঠাইনি যে , তাদের লোকেরা সে সবকে মিথ্যা মনে করে অমান্য করেছে, সামুদকে আমি উটনি এনে দিলাম আর তারা তার উপর জুলুম করল। আমি নিদশêনতো পাঠাই এ জন্য যে, লোকেরা তা দেখে ভয় করবে।” (বনি ইসরাইল) সামুদ গোত্র খুব শত্ত্নিশালী ছিল। তারা পাহাড় খনন করে বাড়ি-ঘর নিমêান করত। বতêমানের এলাকাটি সৌদিআরবের ‘ময়দানে সালেহ’ নামে পরিচিত। সামুদ জাতির লোকেরা নিষিদ্ধ উট জবাই করার অপরাধে আল্লাহ তাদেরকে বিকট শব্দের মাধ্যমে ধ্বংশ করে দেন।

হযরত ইব্রাহীম (আঃ)ঃ
আল কুরআনে বণিêত নবীদের মধ্যে ইব্রাহীম (আঃ) ষষ্ঠতম। তাঁর পিতা অগ্নি পূজক আজর ছিল নমরুদের মন্ত্রী। ইরাকের নাসিরিয়া থেকে মাত্র ১৫ কিলোমিটার এবং বাগদাদ থেকে ৩৯৬ কিলোমিটার দূরে ‘উর’ নামক স্থান যা প্রাচীন বাবেল শহর নামে পরিচিত। এখানে একটি বিধ্বস্ত দোতলা বাড়ি, যেখানে মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম আঃ প্রায় চার হাজার বছর পূবেê জন্ম গ্রহন করেন । ১৯৬৭ সালে এক প্রত্নতাত্বিক গবেষনায় দেখা গেছে ইব্রাহীম আঃ এর সময়ে এই নগরীতে ৪০ ফুট উঁচু ১১৮০টি মন্দির ছিল। বাবেল শহরের ম্যাকফেলা গুহায় তাঁর কবর রয়েছে। হিট্রিদের কাছ থেকে তিনি গুহাটি ত্র্নয় করেন। তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী হাজেরার গভেê ঈসমাইর আঃ জম্নগ্রহন করেন। আল্লাহর নিদেêশে শিশু পুত্র সহ বিবি হাজেরাকে মক্কা উপত্যাকায় নিবêাসন দান করেন । অতঃপর ঈসমাইল আঃ কে কুরবানীর নিদেêশ আসে। ইব্রাহীম আঃ ফিলিস্তিনে ফিরে গিয়ে দেখেন সারার গভেê হযরত ইসহাক আঃ এ জম্ন হয়েছে। ইব্রাহীম আঃ ও ঈসমাইল আঃ সম্নিলিত ভাবে কাবাঘর নিমêান করেন। তাঁর নাম কুরআনের ২৫টি সূরায় ৬৯ বার আল্লাহ উল্লেখ করেছেন।হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর পিতার নাম ছিল আযর। হযরত লুত (আঃ) ইব্রাহীম (আঃ) এর ভাতিজা ও অনুগামী। হযরত ইসমাইল (আঃ) এর জন্মকালে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বয়স ছিল ৮৭ বছর এবং হযরত ইসহাক (আঃ) এর জন্মকালে তাঁহার বয়স ছিল ১০০ বছর। হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর বয়স ছিল ১৭৫ বছর। কেরআনে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) সম্পকেê বলা হয়েছে- “নিঃসন্দেহে আমি ইব্রাহীমকে প্রথম হইতেই হেদায়েত ও সৎপথের জ্ঞান দান করিয়াছিলাম এবং তাঁহার সম্বন্ধে খুব পরিজ্ঞাত ছিলাম। যখন তিনি তাঁহার পিতা ও স্বীয় কাওমকে বলিলেন এই মূতিê গুলো কি? যাহা লইয়া তোমরা বসিয়া রহিয়াছে। তাহারা বলিল আমরা আমাদের পূবêপুরুষগনকে ইহাদেরই পূজা করিতে দেখিয়াছি। ইব্রাহিম (আঃ) বলিলেন নিঃসন্দেহে তোমরা এবং তোমাদের পূবêপুরুষগন প্রকাশ্য ভ্রান্তির মধ্যে রহিয়াছে। তাহারা উত্তর করিল তুমি কি আমাদের জন্য কোন সত্য লইয়া আসিয়াছে? না কি এমনি বিদ্রুপকারীদের মত বলিতেছ? ইব্রাহীম (আঃ) বলিলেন (এ সমস্ত মূতিê তোমাদের প্রতিপালক নহে) বরং তোমাদের প্রতিপালক জমিন ও আসমানসমুহের পরওয়ার দিগার যিনি এই সমুদয়কে সৃষ্টি করিয়াছেন। আর আমি এই বিশ্বাসই পোষণ করিতেছি। (সুরা আম্বিয়া- ৫১-৫৬) । হযরত ইব্রাহিম (আঃ) দেখিলেন শিরকের সবêাপেক্ষা প্রধান কেন্দ্র তাঁহার নিজের ঘরে বতêমান। আর আযরের মুতিê নিমêান ও মূতিêপূজা গোটা কাওমের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র ও মেরুদন্ড হইয়া রহিয়াছে। সুতরাং ইহাই সুকৌশল হইবে যে সত্যের প্রতি আহবান এবং সত্যের পয়গাম প্রচার নিজের ঘর হইতেই আরম্্‌ভ করা। তিনি তার পিতাকে সত্যের পথে আহবান করলেন। কিন্তু পিতা তাঁর কথায় কণêপাত করলনা। পিতা বলিলেন তুমি যদি মূতিê সমুহের নিন্দাবাদ হইতে বিরত না হও, তবে আমি তোমাকে প্রস্তর নিক্ষেপ করে হত্যা করিয়া ফেলিব। পিতার কথা শুনে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) বললেন পিতা ! যদি আমার কথার উত্তর ইহাই হয় তবে আজ হইতে আপনাকে সালাম করিয়া পৃথক হইয়া যাইতেছি। আমি আল্ল্লাহ তায়ালার সত্য ধমê ত্যাগ করিতে পারিতেছিনা এবং কোন অবস্থাতেই মূতিêপূজা করিতে পারিব না। পিতা ও পুত্রের মধ্যে যখন ঐক্য হওয়ার কোনই উপায় হইল না। তখন তিনি তাঁর পিতার নিকট হইতে পৃথক হইয়া গেলেন এবং কাওমের কাছে সত্যের দাওয়াত দিলেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন- “অতঃপর ইব্রাহীম (আঃ) চুপি চুপি যাইয়া তাহাদের মূতিê সমূহের মন্দিরে প্রবেশ করিল এবং তাহাদের মূতিêসমূহ কে বলিল (তোমাদের সম্মুখে স্তরে স্তরে সাজান ও সমস্ত সুস্বাদু খাদ্যদ্রব্যসমুহ ) তোমরা খাইতেছ না কেন? তোমাদের কি হইল, কথা বলিতেছ না কেন? অতঃপর নিজের ডান হাত দ্বারা সমস্ত মূতিê গুলিকে ভাঙ্গিয়া ফেলিলেন”। (সুরা আছ্‌ ছাফ্‌ফাত - ৯১-৯৩)তিনি ১৭৫বয়সে ইন্তিকাল করেন। তিনি ছিলেন মুসলিম জাতির পিতা। এছাড়া ইব্রাহীম (আঃ) এর বংশে মানব জাতির অসংখ্য নেতা জন্মগ্রহন করেন।এ প্রসংগে আল্লাহ বলেন “---আমি তোমাকে সকল মানুসের নেতা করতে চাই, তিনি ইব্রাহীম (আঃ) বললেন আমার সন্তানদের প্রতিও কি এই ওয়াদা ? তিনি (আল্লাহ ) উত্তরে বললেন -“আমার এ প্রতিশূÝতি জালিমদের জন্য নহে” । (সূরা বাকারাহঃ১২৪)। ইব্রাহীম (আঃ)এর সময়ে রাষ্ট্র্রপ্রধান ছিলেন নমরুদ । নমরুদের রাজ্য ছিল বাবেল , ইরাক ও কলোনী অঞ্চল নিয়ে বেস্তৃত। অতপর আল্লাহর গজব মাছি দ্বারা আত্র্নান্ত হয়ে নমরুদ মৃতুøবরন করে। ইব্রাহীম (আঃ) জীবনের গুরুত্বপূনê অনেক ঘটনা রয়েছে যার মধ্যেঃনিজ সন্তানকে আল্লাহর আদেশে মরুভূমির রেখে আসা। বুখারী শরীফে তা নিন্মরুপে বণিêত-ইব্রাহীম আঃ হাজের রাঃ এবং তাহার স্তন্যপায়ী শিশু ইসমাইলকে লইয়া চলিলেন। যেখানে বতêমান কাবা গৃহ অবস্থিত তথায় একটি বড় বৃৃক্ষের নীচে যম যম কূপ বতêমান স্থানের উপরের অংশে তাহাদিগকে ছাড়িয়া গেলেন। এই স্থানটি তখন অনাবাদী এবং বীরাণ ছিল। পানির নাম চিহ্ন পযêন্ত ছিল না । সুতরাং ইব্রাহীম আঃ এক মোশক পানি ও এক থলিয়া খেজুর তাহার নিকট রাখিয়া দিলেন। অতপর মুখ ফিরিয়া রওয়ানা হলেন। হাজেরা রাঃ জিজ্ঞাসা করিলেন-হে ইব্রাহীম , আপনি আমাদিগকে উপত্যকা ভুমিতে কোথায় ছাড়িয়া যাইতেছেন? যেখানে মানুষ নাই কোন সহায় নাই কোন দুঃখের সাথী ও নাই। তিনি কোন জবাব না পেয়ে অবশেষে বললেন - এটা কি আপনার রবের আদেশ ?ইব্রাহীম আঃ বলিলেন - হ্যাঁ। তিনি বলিলেন- এটা যদি আল্লাহর আদেশে হয়ে থাকে , তাহলে তিনি আমাদের অবশ্যই ধবংস ও বিনষ্ট করিবেন না। অতঃপর ইব্রাহীম আঃ সেখান হতে প্রস্থান করিলেন। হাজেরা রাঃ কয়েকদিন মোশক হতে পানি এবং থলি হতে খেজুর খাইতে এবং ইসমাইলকে দুধ পান করাইতে লাগিলেন, কিন্তু পরিশেষে এমন সময় আসিয়া গেল যে পানিও রহিল না খেজুর ও রহিল না। হাজেরা আঃ ছিলেন নিজে ক্ষুধাতê । ফলে তাঁর বুকের দুধ ফুরিয়ে গিয়েছিণ। তৃ্‌ষ্ণাতê শিশুপুত্র কে পানি পান করার আশায় পাহাড়ে ওঠা নামা করতে লাগলেন । এভাবে তিন সাতবার পাহাড়ে ওঠা নাম করলেন। এই জন্য এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে স্মরণ রাখার জন্য মহানবী সাঃ হাজিদের এটা পালন করতে আদেশ দেন। সবêËেশষে যখন হাজরা রাঃ পাহাড়ে তখন তিনি একটি আওয়াজ শুনতে পান। তিনি চমকিয়ে উঠিলেন এবং যদি সাহাায্য করার ইচ্ছা থাকে তো সামনে আস। অতঃপর দেখিলেন আল্লাহর ফেরেশতা জিব্রাইল আঃ নিজের পায়ের গোড়ালী দ্বারা আাঘাত করিয়া একটি গতê করছেন । তৎক্ষনাৎ সেখান হতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এই স্থানটি বতêমানে যমযম কূপ নামে পরিচিত। ১· সত্যের দাওয়াত দেওয়ার কারণে তাঁকে আগুনে নিক্ষেপ করা হলো। আল্লাহর হুকুমে আগুন ফুলের বাগানে পরিণত হল। এখানে পরীক্ষায় তিনি উত্তীণê হলেন। যখন তাকে অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছির , তখন ধৈযেêর পরাকাষ্টা এবং আল্লাহর ফয়সালায় ও নিধাêরিত তাকদিরে সন্তুষ্টির পরিচয় দিয়েছেন। সেই দুঢ়তা ও স্থৈযêকে পেশ কারয়াছেন উহা তাঁর যোগ্য কাযê ছিল। ২· আল্লাহর হুকুমে তার বৃদ্ধ বয়সের সন্তান ইসমাইল কে কোরবানী করার ঘটনা। আল্লাহ প্রিয় বস্তু কোরবানীর জন্য ছুরি চালান। কিন্তু আল্লাহ খুশি হয়ে ইসমাইল (আঃ) কে কোরবানী নাকরে একটি দুম্বা কোরবানী করেন।

Nobider Jiboni