শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১০

Nobider Jiboni (4)

হযরত শুয়াইব (আঃ)
কোরআন মাজিদে শুয়াইব (আঃ) কে মাদইয়ান ও আইকা বাসীদের নবী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মাদাইনবাসীদের বসবাস ছিল উত্তর হিজাজ থেকে ফিলিস্তিনের দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে এবং সেখান থেকে সিনাই উপত্যকার শেষ প্রান্ত পযêন্ত আকাবা উপসাগর এবং লোহিত সাগরের তীর পযêন্ত। মাদইয়ান ছিল তাদের প্রধান শহর। তিনি মূসা (আঃ) এর পূবেêর নবী ছিলেন। শুয়াইব (আঃ) খৃঃ পূবê ৫০০-৬০০ সালের মধ্যে মাদায়েনে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ইব্রাহিম (আঃ) এর ছেলে মাদায়েনের বংশধর। রাসূল (সঃ) তাঁকে ‘খতিবুল আম্বিয়া’ বা নবীদের মাঝে ‘শ্রেষ্ঠ বত্ত্না’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মাদায়েনের জনগণের সুবিধার জন্য তিনি একটি কূপ খনন করেন। এই কূপের পানি থেকে জনগন উপকৃত হত। তিনি মাদায়েন ও আইকা সম্প্রদায়ের নবী হিসেবে প্রেরিত হন। মূসা (আঃ) এর শ্বশুর ছিলেন শুয়াইব (আঃ)। মাদায়েনবাসী সম্পকেê আল্লাহ বলেন- “আমি মাদায়েনবাসীদের প্রতি তাদের ভ্রাতা শুয়াইব (আঃ) কে পাঠিয়েছিলাম। সে বলেছিল, হে আমার সম্প্রদায় তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর,···।” (আনকাবুত-৩৬)মাদইয়ান ও আকাইবাসীদের দুরাচারঃ১· তারা আল্লাহর দ্বীনকে বিকৃত করেছিল।২· আল্লাহর সাথে শিরক করত এবং মুতিê পূজা করত। ৩· তারা জীবন যাপনের সঠিক পথ থেকে দূরে সরে পড়েছিল।৪· তারা মাপে কম দিত, ঠকাতো এবং প্রতারণা করত।৫· ডাকাতি এবং হাইজাক ছিল তাদের নিত্যদিনের কাজ।হযরত শুয়াইব (আঃ) অনেক চেষ্টা করেও এই দুটি জাতিকে যখন আল্লাহর পথে আসল না এবং নবী ও তার সাথীদের উৎখাত করার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিল আল্লাহ তখন উভয় জাতিকে প্রচন্ড বজ্রধ্বনি দিয়ে ধ্বংশ করে দিলেন।

হযরত মূসা (আঃ)ঃ
মূসা (আঃ) ৩২০০ বছর পূবেê মিশরের সিনাই উপত্যকায় জন্মগ্রহন করেন। মূসা শব্দের অথê মূশা যার অথê নাজাত দানকারী। তিনি বনী ইসরাঈলকে ৪০০ বছরের গোলামী থেকে নাজাত দান করেছিলেন। জন্মের পর তিনি আল্লাহর কুদরতে ফেরাউন দ্বিতীয় রামিসাসের ঘরে লালিত-পালিত হন। তিনি নবুয়্যত লাভের পর আল্লাহর নিদেêশে ফেরাউন এর নিকট আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে যান। তিনি হযরত ইব্রাহীমের নাতী ইয়াকুবের বংশধর। যারা বনী ইসরাঈল নামে পরিচিত ছিল। তৎকালে মিশরে ফারাওরা রাজত্ব করত। মুসার জন্মের সময় যে ফেরাউন রাজা ছিল তার নাম ছিল দ্বিতীয় রামিসাস। জন্মের পর রাজার ভয়ে তার মাতা তাকে সিন্দুকে ভরে নদীতে ভাসিয়ে দিলেন। রাজপ্রাসাদ নদীর তীরবতêী হওয়ায় সিন্দুকটি রাজপ্রাসাদের ঘাটে গিয়ে ভিড়ল। ফেরাউন সিন্দুকের শিশুটিকে দেখে বনী ইসরাঈলের সন্তান ভেবে মেরে ফেলার নিদেêশ দিলেন। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় ফেরাউনের স্ত্রী আছিয়া তাকে মৃতুøর হাত থেকে রক্ষা করলেন। এভাবে ফেরাউনের ঘরেই তিনি লালিত পালিত হতে থাকেন। বড় হয়ে তিনি পিতা-মাতার কাছ থেকে জানতে পারলেন যে, তিনি ইব্রাহিম ও ইয়াকুবের বংশধর। ফলে তিনিও মানসিকভাবে সত্যানুসন্ধানী হয়ে ওঠেন। ফেরাউন দাওয়াত গ্রহনে অস্বীকৃতি জানায় এবং মু’জিযা দাবী করলে তিনি তাঁর হাতের লাঠিখানা মাঠিতে নিক্ষেপ করেন এবং সাথে সাথে তা বিশাল অজগরে পরিণত হয়। মু’জিযা প্রত্যক্ষ করা সত্বেও দাওয়াত গ্রহনে অস্বীকৃতি জানিয়ে মুসা এবং তার অনুসারীদের উপর জুলুম নিযêাতন করে। খৃঃপূবê ১২৩৫ সালে মূসা (আঃ) তাঁর সঙ্গী সাথীদেরকে নিয়ে ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ফেরাউন তার সৈন্য সামন্ত নিয়ে মূসা (আঃ) এর পশ্চাদ্ধাবন করে লোহিত সাগরের দিকে রওনা হন। মূসা (আঃ) তাঁর হাতের লাঠি সাগরে নিক্ষেপ করলে বারোটি রাস্তা তৈরি করা হয়। মূসা (আঃ) তার সাথীদের নিয়ে সাগর অতিত্র্নম করেন। কিন্তু ফেরাউন সাগরের মাঝামাঝি আসা মাত্র সঙ্গী সাথীদের সলীল সমাধী ঘটে। মিশরের যাদুঘরে ফেরাউেনের লাশ আজও রক্ষিত আছে। মূসা (আঃ) তুর পাহাড়ে আল্লাহ তায়ালার সাথে কথা বলেন এবং নবুয়্যত প্রাপ্ত হন। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন- “তাকে আমি আহ্বান করেছিলাম তুর পাহাড়ের দক্ষিণ দিক থেকে এবং আমি অন্তরঙ্গ আলাপে তাকে নিকটবতêী করেছিলাম। আমি নিজ অনুগ্রহে তাকে দিলাম তার ভ্রাতা হারুনকে নবী রুপে। (মরিয়ম-৫২-৫৩)। সমুদ্র সমতল থেকে তুর পাহাড়ের উচ্চতা ৮২৬ মিটার। তুর পাহড়ে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তাওরাত নামক আসমানী কিতাব প্রাপ্ত হন। সমুদ্র অতিত্র্নম করে মূসা (আঃ) বনী ইসরাঈলদের নিয়ে বায়তুল মাকদাস রওয়ানা হন। মরুভুমিতে পানির অভাব হলে হাতের লাঠি দিয়ে পাথরে আঘাত করলে আল্লাহর নিদেêশে পানির ১২ টি ঝণêা প্রবাহিত মকরে শুরু করে, যা আজও প্রবহমান। হযরত হারুন (আঃ) ছিলেন মূসা (আঃ) এর ভাই। তিনি ছিলেন ইব্রাহিম (আঃ) এর সপ্তম অধঃস্তন পুরুষ। তিনি মূসা (আঃ) এর সাহায্যকারী ও প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন- “আমি তো মূসা (আঃ) কে কিতাব দিয়েছিলাম এবং তার ভাই হারুনকে তার সাহায্যকারী করেছিলাম এবং বলেছিলাম তোমরা সেই সম্প্রদায়ের নিকট যাও , যারা আমার নিদশêনাবলীকে অস্বীকার করেছে। অতঃপর আমি তাদেরকে সম্পূণêরূপে বিধ্বস্ত করেছিলাম”। (আল ফুরকান-৩৫-৩৬) মূসা (আঃ) যখন চল্লিশ দিন এতেকাফের জন্য গমন করেন তখন হারুন (আঃ) কে তার স্থলাভিষিত্ত্ন করে যান। সিনাই উপত্যকায় থেকে তিনি বনী ইসরাঈলীদের রাফিদিনে পৌছান। এ জায়গা থেকে হারুন (আঃ) আল-মারখাওয়াতে যান যেখানে মান্নাহ ও সালওয়া নাযিল হয়েছিল। হারুন (আঃ) মূসা (আঃ) এর ৩ বছর পূবেê জন্ম গ্রহন করেন। হযরত মূসা (আঃ) এর বংশ পরিচয়ঃ হযরত মূসা (আঃ) এর বংশধারা কয়েক পুরুষের মাধ্যমে হযরত ইয়াকুব (আঃ) পযêন্ত পৌছে। তাঁর পিতার নাম ইমরান এবং মাতার নাম ইউকাবাদ। হযরত হারুন (আঃ) তাঁর সহোদর ও জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ছিলেন। ইমরান এর গৃহে হযরত মূসা (আঃ) এর জন্ম হয়েছিল এমন সময়ে যখন ফেরাউন বনী ইসরাইল বংশের সদ্যোজাত বালকদিগকে হত্যা করা করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। হযরত মূসা (আঃ) এর মু’জিযাসমুহঃ১· লাঠি২· শুভ্রোজ্জল হাত ৩· দুভিêক্ষ৪· শস্যহানি ৫· ঝড়-তুফান ৬· পঙ্গপাল৭· উকুন ৮· ব্যাঙ৯· রত্ত্ন ১০· লোহিত সাগর খন্ডিত হয়ে শুষ্ড়্গ রাস্তা বাহির হওয়া১১· মান্না ও সালওয়া (হালুয়া এবং বটের পাখীর ভাজা মাংস ১২· গামাস(মেঘের ছায়া) ১৩· পাথর হইতে লাঠির আঘাতে পানির ঝণêা প্রবাহিত হওয়া১৪· তূর পাহাড় সমূলে উৎপাটিত হয়ে মাথার উপরে আসা ১৫· তাওরাত নাযিল হওয়া কয়েকটি বিষয়ঃ১· মানুষ যদি কোন বিপদ ও পরীক্ষার সম্মুখীন হয়, তবে তাহার অবশ্য কতêব্য হয় ধৈযê্য ও সন্তুষ্টির সাথে উহার মোকাবিলা করা। এরূপ করলে নিঃসন্দেহে সে মহা মঙ্গল লাভ করবে এবং নিশ্চিত সে সফলকাম হবে। ২· যদি আল্লাহ পাকের কোন বান্দা সত্যের সাহায্যাথেê জীবন হাতে লয়ে দাঁড়িয়ে যায়, তবে আল্লাহ তায়ালা বাতিলের পূজারীদেরই মধ্য হতে তার সাহায্যকারী পয়দা করে দেন। ৩· যার ব্যাপার আল্ল্লাহ পাকের সাথে ইশক (প্রেম) পযêন্ত পৌঁছে যায়, তার জন্য বাতিলের বড় শত্ত্নিও তুচ্ছ এবং অস্তিত্বশূণ্য হয়ে পড়ে।৪· একবারও যদি কেহ ঈমানের সুস্বাদু উপভোগ করে লয় এবং সত্য মনেও খাঁটিঅন্তরে উহাকে কবুল করে লয় তবে এই মোহ তাকে এতই মত্ত করে ফেলে যে তার প্রত্যেক টি ধমনী হতে শুধু সেই সত্যের ধ্বনিই উত্থিত হতে থাকে। ৫· সবরের ফল সবêদা মিষ্ট হয়ে থাকে সেইফল লাভ করতে যত দুঃখ কষ্ট করতে হোক না কেন তবু সেই ফল মিষ্টই লাগবে। জমীনের কিংবা রাজ্যের উত্তরাধিকারীত্ব সেই কাওমেরই প্রাপ্য যারা নিঃস্বতা ও নিঃসম্বলতা হতে নিভêীক হয়ে এবং দৃঢ় সংকল্প ও সাহসের পরিচয় দিয়ে সবêপ্রকার বাধা বিপত্তির মোকাবেলা করে এবং ধৈযেêর সাথে আল্লাহ পাকের সাহায্য ভরসা করে চেষ্টা ও পরিশ্রম ময়দানে দৃঢ়পদ থাকে। ৬· বাতিলের শত্ত্নি যতই যবর দস্তি হোক এবং যতই প্রতাপ ও পরাত্র্নমশালী হোক না কেন পরিশেষে তাকে বিফলতার মুখ দেখতেই হবে এবং পরিনামে সাফল্যের মুকুট তারই জন্য সুনিশ্চিত যে নেককার এবং সাহসী। ৭· আল্লাহর চিরন্তন নীতি উৎপীড়ক ও অত্যাচারী কাওম গুলি যে সমস্ত কাওমকে হীন ও নীচ মনে করে এমন একদিন আসে যে সেই দুবêল ও উৎপীড়িত কাওমগুলো আল্লাহ পাকের যমীনের উত্তরাধিকারী হয় এবং শাসন ও ক্ষমতার অধিকারী হয়ে যায়। ৮· শত্ত্নি ও শাসন ক্ষমতা এবং ধন সম্পদের মদে মত্ত কাওমগুলিই সবêদা সত্যের দাওয়াতের বিরোধীতা করেছে। ৯· ইহা অত্যন্ত বড় গুমরাহীযে যখন সত্যের বদৌলতে মানুষ সফলতা ও কৃতকাযêতা লাভ করে, তখন আল্লাহর শোকর গুজারী দাসত্ব ও মিনতির পরিবতেê সত্যের বিরোধীদের ন্যায় অমনোযোগীতা ও অবাধ্যাচরনে লিপ্ত হয়ে পড়ে। ১০· ধমêীয় ব্যাপারে একটি অতি বড় গুমরাহী হল মানুষের সততা ও সত্য নিষ্ঠার সাথে ধমêীয় বিধানের উপর আমল না করা এবং নিজের কু-প্রবৃত্তির অনুসরণ করে আল্লাহ পাকের বিধানসমূহে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী টালবাহানা করা এবং আত্নপ্রতারণায় লিপ্ত হয়ে এরূপ মনে করে বসা যে মনোবাঞ্জা ও পূরণ হয়ে গেল এবং ধমêীয় বিধান পালন ও হয়ে গেল। মন্দকে মন্দ মনে করা উহাতে লিপ্ত হওয়া ততটুকু মন্দ নয়-যতটুকু মন্দ ও নিন্দনীয় হচ্ছে মন্দকে ভালরূপ দান করা এবং নিষিদ্ধ কাযêাবলীতে টালবাহানা করে উহাকে জায়েজ বানানো । অধিকাংশ কওমের উপর আল্ল্লাহতাআলার আযাব এই ঘৃণ্য কাজের দরুনই হয়েছে। ১১· সত্যকে কেউ কবুল করুক বা না করুক, সত্যের প্রতি আহবানকারীর কতêব্য সত্য উপদেশ প্রদানে বিরত না থাকা।১২· কোন কওমের উপর অত্যাচারী ও জালিম শাসক ক্ষমতাসীন হয়ে গেলে এতে প্রমাণিত হয় না যে, সেই অত্যাচারী শাসক আল্ল্লাহর নিকট প্রিয় ও সম্মানিত; বরং অত্যাচারী শাসক আল্লাহর আযাব বিশেষ, শাসিত কওমের মন্দ কাযêসমূহের কমêফলরূপে প্রকাশ পেয়ে থাকে; কিন্তু শাসিত কওমের মস্তিষ্ড়্গকে অত্যাচারী শত্ত্নির প্রভাব এমনভাবে আচ্ছন্ন করে যে, তারা অত্যাচারী শাসকের প্রতাপ ও প্রতিপত্তিকে তার উপর আল্ল্লাহর রহমত এবং তার কাযêাবলীর পুরস্ড়্গার বলে মনে করে।১৩· কোন মানুষের পক্ষেই সে নবীই হোক কিংবা রাসূল হোক, এ দাবী সঙ্গত নয় যে , জগতে তার ন্যায় বড় জ্ঞানী বা আলেম আর কেউ নেই। এরূপ দাবী করা বরং তার পক্ষে আল্ল্লাহর জ্ঞানের উপর ন্যস্ত করে দেওয়া উত্তম।১৪· ইসলাম ধমেêর অনুসারীদের জন্য দাসত্ব গুরুতর লানত বা অভিশাপ, আল্ল্লাহর অতিবড় গযব। আর সেই দাসত্বে তৃপ্ত হয়ে যাওয়া আল্ল্লাহর আযাব ও গযবের উপর সন্তুষ্ট ও তৃপ্ত হওয়ার শামিল।

হযরত যুলকিফ্‌ল (আঃ)ঃ
কুরআন মাজিদে যুলকিফ্‌ল নামটি দুবার উল্লেখ করা হয়েছে। দু‘বারই অন্যান্য নবীদের সাথে তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। একবার সূরা ছোয়াদে এভাবেঃ “ইসমাঈল, আল ইয়াসা আর যুলকিফ্‌ল এর কথা স্মরণ কর। এরা সবাই ছিল উত্তম মানুষ। (সুরা সোয়াদ- ৪৮)। যুলকিফ্‌ল ছিল বনী ইসরাঈলের একজন নবী। কেউ কেউ বলেছেন তিনি ছিলেন আইয়ুব (আঃ) এর পুত্র। যুলকিফ্‌ল শব্দের অথê ভাগ্যবান। এটি ছিল তাঁর উপাধি। তাঁর মূল নাম ছিল বিশর। তিনি ২২ বছর যাবৎ বনী ইসরাঈলীদের মাঝে নবুয়্যতের দায়িত্ব পালন করেন। সুরা আম্বিয়া ৮৫-৮৬, যুলকিফল (আঃ) বনী ইসরাঈলের নবী ছিলেন। কেউ কেউ বলেন তিনি আইয়ুব (আঃ) এর পুত্র ছিলেন। তার মূল নাম ছিল বিশর আর যুলকিফল ছিল তার উপাধী। অনেকে মনে করেন যুলকিফল আসলে বাইবেলে উল্লেখিত যিহিস্ড়্গেল নবী। মুসলমানদের নিকট তিনি হীজকিল নামে পরিচিত।

হযরত ইলিয়াস (আঃ)ঃ
ইলিয়াস (আঃ) জডêানের জিলিয়াদ নামক ন্থানে জন্মগ্রহন করেন। তিনি হারুন (আঃ) এর বংশধর ছিলেন। তার সম্মন্ধে কোরআনে বণêনা করা হয়েছে- “নিঃসন্দেহে ইলিয়াস রাসুলগনের অন্তভêুত্ত্ন। যখন তিনি নিজ সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা কি সাবধান হবে না? তোমরা বায়ালকে ডাকছো অথচ সবেêাত্তম শ্রষ্ঠাকে পরিহার করছ ? সেই আল্লাহকে যিনি তোমাদের এবং পূবêপুরুষদেরও প্রভূ”। (আস সাফ্‌ফাত-১২৩-১২৬) পবিত্র কোরআনে তার নাম তিন বার এসেছ। ঐতিহাসিক এবং তাফসিরকারকদের মতে, ৪ জন নবী এখনও জীবিত আছেন যারা হলেন ইদ্রিস (আঃ), খিজির (আঃ), ইলিয়াস (আঃ) এবং ঈসা (আঃ)। ইলিয়াস (আঃ) সেমেটিক জাতিকে হেদায়েত করার জন্য প্রেরিত হয়েছিলেন। তাঁর জাতি ইলিয়াস (আঃ) এর দাওয়াতকে অগ্রাহ্য করে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তাঁর সম্প্রদায়ের উপর দুভিêক্ষ নেমে আসে এতে রাজা ক্ষিপ্ত হয়ে ইলিয়াস (আঃ) কে হত্যার পরিকল্পনা শুরু করে ফলে আল্লাহ তাকে আসমানে উঠিয়ে নিয়ে যান বলে কোন কোন বণêনায় জানা যায়।

হযরত আল ইয়াসা (আঃ)ঃ
আল ইয়াসা হলেন আল ইসবাত ইবনে আদি ইবনে সাওতালম ইবনে আফ্রাছিম ইবনে ইউসুফ ইবনে ইয়াকুব ইবনে ইসহাক ইবনে ইব্রাহিম খলীল (আঃ)। বলা হয় আল ইয়াসা (আঃ) ছিলেন ইলিয়াস (আঃ) এর চাচাতো ভাই (ইবনে কাছির)। তার পিতার নাম ছিল সাফাত। কথিত আছে ইলিয়াস (আঃ) যখন কাসিউন পাহাড়ে সংগোপনে অবস্থান করছিলেন তখন আল ইয়াসা (আঃ) তাঁর সহযাত্রী ছিলেন। তাঁর জীবনের আরো উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলোঃ আরীয়ার পানি ছিল ব্যাবহারের অনুপোযোগী। আল ইয়াসা (আঃ) সেই পানিতে লবন নিক্ষেপ করলে পানি নিমêল ও সুপেয় হয়ে গিয়েছিল।

হযরত মুহাম্মদ (সঃ)
মানবতার বন্ধু সবêশেষ নবী হযরত মুহা্‌ম্মদ (সাঃ) আরবের মক্কা নগরীতে মাতা আমিনার কোলে ৫৭০ খৃষ্টাব্দে জম্ম গ্রহন করে। জম্মে আগেই পিতা আব্দুল্লাহ মৃতুø বরন করেন। ৫ বছর বয়স পযêন্ত দুধ মা হালিমার কাছে থাকেন। অতঃপর পিতৃব্য আবু তালিবের তত্ত্বাবধানে বেড়ে ওঠেন। মক্কায় শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ১৭ বছর বয়সে হিলফুর ফুজুল নামক শান্তি সংঘ গঠন করেন।কাফিরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নবুয়াতের ৫ম বষেê প্রথম পবেê ১৬ জন আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। দ্বিতীয় দফায় আরো হিজরত করেন ৮৩ জন মুসলমান । এ সময় ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা কুরাইশ নেতা হযরত উমর (রাঃ) ইসলাম কবুল করেন । প্রথম বারের মত মুসলমানরা কাবা প্রাঙ্গনে প্রকাশ্যে সালাত আদায় করেন । ৪৭ বছর বয়সে শিয়াবে আবু তালিবে অবরোধ জীবন শুরূু হয় এবং ৪৯ বছর বয়সে শেষ হয় । তিনি নবুয়াতের ১০ম বষেê ইসলাম প্রচারের জন্য তায়েফে গমন করেন । তায়েফবাসী অস্বীকৃতি জানায় এবং নিযাêতন চালায়। ৫১বছর বয়সে নবুয়াতের ১২বষেê আকাবা নামক স্থানে ১২জন মদীনাবাসী বাইয়াত গ্রহন করেন। তিনি ৫২ বছর বয়সে আয়েশা (রাঃ) এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। অতঃপর সবোêত্তম আদêশ মুহাম্মদ (সাঃ) মক্কায় কাফেরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে আল্লাহর হুকুমে ৬২২ খৃঃ আবু বকর (রঃ)কে সাথে নিয়ে মদিনায় হিজরত করেন। তিনি বিশিষ্ট সাহাবী আবু আইয়ূব আনসারীর বাড়ি উঠেন। বানুনায় উপতক্যায় বনী পল্লীতে ১০০জন সাহাবী নিয়ে জুম্মার নামাজ আদায় করেন।৬২৩ খৃঃ কাফেরদের সাথে ১৭ই রমজান বদরের যুদ্ধ হয়। ৩১৩ জন সাহাবী নিয়ে কাফিরদের মোকাবেলায় রাসূল(সাঃ) বিজয় লাভ করেন । ৩য় হিজরী ১১ শাওয়াল বিখ্যাত ওহূদ যুদ্ধ হয়। এতে চাচা হামযা সহ ১৭জন শাহাদাত বরন করেন। ৪থê হিজরীতে সফর মাসে বীরে মাউনা নামক স্থানে ৬৮ জন ইসলাম-প্রচারক সাহাবীকে কাফিররা নিমêমভাবে হত্যাকরা হয় ।মহানবীকে হত্যা প্রচেষ্টা অপরাধে রবিউল আওয়াল মাসে বনু নাযিল গোত্রকে মদীনা প্রজাতন্ত্র থেকে বহিষ্ড়্গার করা হয়। ৬ষ্ঠ হিজরীতে তিনি হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে ১৫০০ জন সাহাবী নিয়ে মক্কার দিকে যাত্রা শুরু করেন । হুদাইবিয়া নামক স্থানে কাফিররা বাধা প্রধান করে। সেখানে ঐতিহাসিক হুদায়বিয়া সন্ধি সাক্ষরিত হয়। ৮ম হিজরিতে যায়িদ ইবনে হারিসর নেতৃত্বে সিরিয়ায় একদল সৈন্য প্রেরিত হয়। জমাদিউল আওয়াল মাসে সিরিয়ার খৃষ্টান নেতা শোরাহবীলের বাহিনীর সাথে মুতা নামক স্থানে এক রত্ত্নক্ষয়ী যুদ্ধ হয় । এই যুদ্ধে মুসলিম সেনাপতি যায়িদ ইবনে হারিসা, জাফর ইবনে আবু তালিব ও আব্দুল্লাহ ইবনে রাওহা শাহাদাত বরন করেন ।৮ম হিজরী (২০ রমজান) ৬২ বছর বয়সে ১০ হাজার মুসলিম সৈন্য নিয়ে মহানবী (সাঃ) বিনা রত্ত্নপাতে মক্কা বিজয় করেন। ৬৩২খৃষ্টাব্দে ১২ রবিউল আওয়াল সোমবার ৬৩ বছর বরসে মহানবী (সাঃ) ইন্তেকাল করেন। ১৪ রবিউল আওয়াল রাসূল (সাঃ) এর দাফন সম্পূনê হয়।

হযরত দাউদ (আঃ)
দাউদ (আঃ) ফিলিস্থিানে জম্মগ্রহন করেন। তিনি ইয়াকুব (আঃ) এর ১২ পুত্রের মধ্যে ইয়াহুদার বংশধর ছিলেন। তিনি ছিলেন সুবত্ত্না ও সুমধুর কন্ঠের অধিকারী। ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুয়াত প্রাপ্ত হন। যখন তিনি যাবুর কিতাব পাঠ করেতেন তখন আকাবা উপসাগরের মাছ, আকাশের পাখি, বনের পশু এক হয়ে আল্লাহর কিতাব শুনতো। আকাবা উপসাগরের তীরে বসে তিনি প্রতি শনিবার যাবুর কিতাব তিলাওয়াত করতেন। দাউদ (আঃ) ঐ এলাকার মানুষকে শনিবার মাছ ধরতে নিষেধ করেন। কিন্তু তারা শনিবার বাধ দিয়ে অন্য দিন মাছ ধরতো। ফলে আল্লাহর গজবে তারা বানরে পরিনত হয।পবিত্র রমজান মাসের ১২ তারিখ তার উপর যাবুর কিতাব অবতীনê হয়। তিনি পশু পাখির ভাষা বুঝতেন। হযরত দাউদ (আঃ) ই প্রথম, যিনি একাধারে রাসুল এবং সুদক্ষ রাষ্ট্র নায়ক ছিলেন। তার সম্পকেê আল্লাহ বলেন “ হে দাউদ ভূ-পৃষ্ঠে আমি তোমাকে আমার খলিফা নিযুত্ত্ন করেছি। অতপর তুমি লোকদের মধ্যে সুবিচার কর এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না।” (সূরা ছোয়াদ ২৬) তিনি মুসা (আঃ) এর শরিয়ত পুনঃজীবিত করেন। পাশ্চাত্যের পন্ডিদদের কাছে তিনি শরহম উবারক নামে পরিচিত। তার সময়ে “উঊগঙএজঅচঐজ" শাস্ত্রের আবিêভাব ঘটে। তিনিই প্রথম পৃথিবীতে মানুষ গণনা বা আদমশুমারি শুরূ করেন। তার তত্ত্বাবধানে যুদ্ধাস্ত্র তৈরীর প্রচলন শুরূ হয়। জেরুজালেমে একটি উচু টাওয়ার নিমêান করেন যেখানে উঠলে মরুসাগর ও জদাêন নদী দেখা যেত।

হযরত সুলায়মান (আঃ)
হযরত সুলাইমান হযরত দাউদের পুত্র ছিলেন। তিনি খৃঃ পূবê ১০৩৫ অব্দে জেরূজালেমে জম্ম গ্রহন করেন। তিনি ছিলেন দাউদ আঃ এর সুযোগ্য পুত্র। বায়তুল মাকদাসের দৈঘê ৬০ হাত এবং প্রস্থ ২০ হাত, উচ্চতা ৩০ হাত ছিল। সুলায়মান( আঃ) কে আরে্‌লাহ তায়ালা জ্বীনকে বশীভুত করার ক্ষমতা দান করেছিলেন । এ সম্পকেê আল্লাহ বলে্‌ন“ আর বশীভূত করে দেয়া হয়েছে অবাধ্য জ্বীনকে যে সবê প্রকার কমê সমাধানকারী, ইমারত নিমাêনকারী এবং সমুদ্রে ডুবুরী রূপ”(সূরা ছোয়াদ ৩৭) মাসজিদুল আকসা পুনঃনিমাêনে ৩০,০০০ শ্রমিক ৭ বছর যাবৎ পরিশ্রম করেন। তার শাসনকালে বিদ্যাসূচনা। তিনি একাধারে সম্রাট ও নবী ছিলন। তিনি পশু-পাখির ভাষা বুঝতেন। বাতাস ও জ্বীন জাতি তার অনুগত ছিল। তার রাজত্বকাল ছিল ৯৬৫-৯২৬ খৃষ্টপূবêাব্দ। একবার দুই মহিলার বাচ্চা নিয়ে দ্বন্দ্ব বাধে। একজনের বাচ্চা নেকড়ে বাঘে নিয়ে যায়। ধুতê মহিলা অন্যের বাচ্চা বলে দাবী করে। বিষয়টি বাদানুবাদের একপযêায়ে হযরত সুলাইমানের দরবারে হাজির হয়। ধুতê মহিলা জোর গলায় কসমের কারনে সুলাইমান তাকে বাচ্চাটি দিয়ে দেন। অপর মহিলাটি সুলাইমানের নিকট গেলেন এবং বিষয়টি খুলে বললেন। সুলাইমান সব শুনে বাচ্চাটিকে দ টুকরো করে দু জনকে দিয়ে দেয়ার নিদেêশ দিলেন। এ কথা শুনে শিশুটির প্রকৃত মা বললেন, না হুজুর এমনটি করবেন না। আমি আমার বাচ্চার দাবী ছেড়ে দিচ্ছি। এ কথা শুনে সুলাইমান (আঃ) সঠিক তথ্য উদঘাটন করতে সক্ষম হন এবং বাচ্চাটিকে তার আসল মায়ের নিকট ফিরিয়ে দেন। হ

যরত ইউনুস (আঃ)
ইউনুস আঃ ইরানের নিনেয়া শহরে যার বতêমান নাম মসুল বাগদাদ থেকে ৩৯৬কিঃমিঃ উত্তরে ফোরাত নদীর তীরে খৃ পূবê ৩৭২ সালে জম্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম আসতাহ। তিনি ২৮ বছব বয়সে নবুয়াত প্রাপ্ত হন। নিনেয়াবাসী যখন ইউনুস আঃ এর কথা অমান্য করে আল্লাহর নাফরমানিতেন লিপ্ত ছিল এবং পয়গায়ম্বরের কথায় ঠাট্রা বিদ্রোপ করছিল তখন তিনি বদদোয়া করে অন্যত্র চলে যাচ্ছিলেন যাবার কালে ফোরাত নদীর তীরে নৌকায় উঠার পর প্রচন্ড ঝড়তুফান শুরু হলো। তখন যাত্রীরা লটারীর সাহায্যে ইউনুস আঃ কে দায়ী করে নদীতে নিক্ষেপ করলে আর্‌লাহর হুকুমে নদীর মাছ তাকে গিলে ফেলেছিল। যখন তিনি বুঝতে পারলেন যে মাছের পেটে জীবিত আছেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে এস্তেগফার ও তাসবিহ পাঠ শুরু করলেন। আর আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করলেন। পরে মাছ তাঁকে উগলিয়ে নদীর তীরে ফেলে দিল। তিনি সেখানে একখানা কুটির নিমêান করে কিছু দিন বসবাস করলেন। এবং আল্লাহর নিদেêশে পুনরায় মসুলে ফিরে গেলেন। এ ব্যাপারে পবিত্র কোরয়ানে আল্লাহ বলেন “আর ইউনুস “আঃ”অবশ্যই প্রেরিত পুরুষদের অন্যতম।” (সুরা আস সাফফাত-১৩৯)

হযরত যাকারিয়া(আঃ)
যাকারিয়া (আঃ) প্রায় ২১০০বছর পূবেê ফিলিস্তনে বনি ইসরাঈল গোত্রে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি সুলাইমান ইবনে দাউদ (আঃ) এর বংশধর ছিলেন।তার স্ত্রী ইশা বা ইয়শ হারূন আঃ এর বংশধর। ইয়াহিয় (আঃ) এর পিতা এবং নবী ঈশা( আঃ) এর খালু যাকারিয়া (আঃ) বায়তুল মাকদাসের রক্ষনাবেক্ষনকারী এবং ঈশা (আঃ) এর মাতা সারইয়ামের লালন পালন করতেন। আল্লাহর অনুগ্রহে ১০০ বছর বয়সে এক কন্যা সন্তান লাভ করেন। যার নাম মরিয়ম। যাকারিয়ার স্ত্রী ও মরিয়মের মা ছিলেন সহোদর বোন। যাকারিয়ার বাধêক্যের চরম পযêায়ে তার দোয়ার বরকতে হযরত ইয়াইয়া জন্ম গ্রহণ করেন। (আল ইমরান-৩০,৩৭, মরিয়ম-২৬, আম্বিায়া-৮৯) তার সময় ইহুদীরা প্রকাশ্যে যিনা ব্যাভিচার করত। যাকারিয়া (আঃ) সম্পকেê পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন - “আরো দান করেছি যাকারিয়া, ঈশা, ইয়াহিয়া ও ইলিয়াসকে। তারা সবাই পুন্যবানদের অন্তêভুত্ত্ন ছিল” সূরা (আনয়াম ৮৫) হযরত ইয়াহইয়া (আঃ)পবিত্র করআনে আল্লাহ পাক বলেন “হে যাকারিয়া আমি নিঃসন্দেহে তোমাকে সুসংবাদ প্রদান করছি একপুত্রের নাম হবে ইয়াহইয়া ।

হযরত ইয়হইয়া (আঃ)
পূবেê আর কারো জন্যে এ নাম নিধাêরিত করিনি।”(সূরা মারিয়াম-৭)যাকারিয়া (আঃ) এর দোয়ার বরকতে বন্ধা মাতার গভেê খৃঃ পূবê ১ সালে জম্ম গ্রহন করেন ইয়াহইয়া (আঃ । তিনি ঈশা (আঃ) এর খালাত ভাই ছিলেন । তিনি বেশির ভাগ সময়ে নিজêনে খোদার প্রেমে কান্নাকাটি করে কাটাতেন । তিনি ইয়ারদান নদীর তীরে আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত দিতেন । ইয়াহইয়া (আঃ) মানুষ কে ৫ টি বিষয়ে দাওয়াত দিতেন । ১· আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করা২· সালাত আদায় করা৩· রোজা পালন করা৪· অধিক পরিমানে আল্লাহর যিকির করা৫· দান সাদকা করা ।তার সময়ের শাসক ছিল হিরোদ এন্টিপাস। এন্টিপাস তার এক নতêকীর আবদারে হযরত ইয়হইয়া (আঃ) কে হত্যা করেন এবং তার মস্তক দ্বীখন্ডিত করে নতêকীকে উপহার দেন।

হযরত ঈসা (আঃ)
হযরত ঈসা (আঃ)বায়তুল লাহাম যেখানে আজ থেকে প্রায় দুই হাজার বছর পূবেê ঈসা (আঃ) জম্ম গ্রহন করেন। ঈসা আরবী শব্দ। হিব্রূ ভাষা এর অথê হলো ত্রানকতাê। গ্রীক ভাষায় বলা হয় মাসীই তার উপাধি । এর অথê হল স্পশê করা। কারন ঈসা (আঃ) রূগ্ন ব্যত্ত্নিকে স্পশê করা মাত্রই সুস্থ হয়ে যেত । ঈসা (আঃ) মারইয়ামের গভেê আল্লাহর কুদরতে পিতা ছাড়াই জম্ম গ্রহন করেন। ঈসা (আঃ) এর ৫ টি মুজিজা ছিল। ১· তিনি আল্লাহর হুকুমে মৃতকে জীবিত করতে পারতেন ২· মাটির তৈরী পাখিকে ফু দিলে উড়ে যেত ৩· অন্ধ ও কুষ্ঠ রোগীকে ফু দিলে ভাল হয়ে যেত৪· মানুষ ঘরে যে খাবার খেত তিনি তা বলতে পারতেন ৫· ঈসা(আঃ) এর সঙ্গীদের অনুরোধে আল্লাহর কুদরতে আকাশ থেকে খাদ্য ভরা পাত্র নাযিল হতো ।ঈসা (আঃ) এর মাতা মরিয়ম একদা বায়তুল মাকদাসের পূবêপাশের একটি কক্ষে ইফতাররত। হঠাৎ তার কক্ষে অপরুপ সুপুরুষের উদয় হল। তিনি বললেন আমি তোমার প্রভূর দূত। তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন এই সংবাদ নিয়ে যে , তিনি তোমাকে একজন পবিত্র পুত্র সন্তান দান করবেন। (মরিয়ম ১৬-২০) মরিয়ম বিস্মিত হয়ে বললেন, আমাকে তো কোন পুরুষ স্পশê করেনি। আমি তো ব্যাভিচারী নই। কি করে আমার পুত্র সন্তান হবে। ফিরিশতা বললেন, আল্লাহ যা চান তাই হয়। পুত্র সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার পুবেê তিনি বেথেলহাম চলে যান। আল্লাহর নিদেêশে হযরত ঈসা (আঃ) জন্ম গ্রহন করলেন। জন্মের পর মরিয়ম ছেলেকে কোলে নিয়ে ফিরে এলে লোকেরা তাকে অপবাদ দিতে লাগল। আল্লাহর ইচ্ছায় শিশু ঈসা কথা বলে উঠলেন- “আমি আল্লাহর দাস। তিনি আমাকে কিতাব দান করেছেন এবং কিতাব দান করেছেন। তিনি ৩০ বছর বয়সে নবুয়াত প্রাপ্ত হন । তার উপর ইঞ্জিল কিতাব অবতীনê হয়। বনি ইসরাঈলগন তাকে শুলে চড়িয়ে হত্যা করতে চেয়েছিল। আল্লাহ তাদের চত্র্নান্ত নস্যাৎ করে দিয়ে মাত্র ৩২ বছর বয়সে তাকে উধ্বê জগতে নিয়ে যান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন